Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরমে বাড়ছে হিট স্ট্রোক

স্বাভাবিকের তুলনায় এই বছর গরম মাত্রাতিরিক্ত। তীব্র গরমে মানবদেহের রোগের মাত্রা বেড়ে গেছে। ফলে এই বছর হিট স্ট্রোকের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে।

হিট স্ট্রোক আসলে কী
স্বাভাবিকের তুলনায় শরীরের তাপমাত্রা যখন অতিরিক্ত বেড়ে যায়, তখনই হিট স্ট্রোক হয়। প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। মানবদেহ কখনোই ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা রাখে না।

হিট স্ট্রোক কাদের বেশি হয়
প্রচণ্ড গরমে ও আর্দ্রতায় যে কারও হিট স্ট্রোক হতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা তাদের বেশি থাকে। যারা দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদে কায়িক পরিশ্রম করেন, তাদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। যেমন কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক। শরীরে পানিস্বল্পতা হলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো কী
শরীরের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে শুরু করে। হিট স্ট্রোকের আগে অপেক্ষাকৃত কম মারাত্মক হিট ক্র্যাম্প অথবা হিট এক্সহসশন হতে পারে। হিট ক্র্যাম্পে শরীরের মাংসপেশীতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে ও প্রচণ্ড পিপাসা পায়। এরপরের ধাপে হিট এক্সহসশনে দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব, ইত্যাদি দেখা দেয়। এই দুই ক্ষেত্রেই শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ঠিক থাকে এবং শরীর অত্যন্ত ঘামতে থাকে। এ অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হিট স্ট্রোক হতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে যায়। ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। নিঃশ্বাস দ্রুত হয়। নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয় এবং রক্তচাপ কমে যায়। মাথা ঝিমঝিম করা,অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন ইত্যাদি। এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। রোগী শকেও চলে যায়।

প্রতিরোধের উপায়
গরমের দিনে কিছু সতর্কতা মেনে চললে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচা যাবে। যেমন:

* সুতি কাপড়ের হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।

* যথাসম্ভব রোদ এরিয়ে চলুন ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন।

* বাইরে বের হতে হলে মাথার ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করুন।

* প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল পানি পান করুন। মনে রাখবেন, গরমে ঘামের সঙ্গে পানি ও লবণ দুই-ই বের হয়ে যায়। তাই পানির সঙ্গে সঙ্গে লবণযুক্ত পানীয় যেমন-খাবার স্যালাইন, ফলের রস, ডাবের পানি ইত্যাদিও পান করতে হবে। পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ হতে হবে।

* তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী পানীয় যেমন-চা ও কফি, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন।

* রোদের মধ্যে শ্রমসাধ্য কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। যদি দিনে করতেই হয়, তবে কিছুক্ষণ পরপর বিশ্রাম নিতে হবে ও প্রচুর পানি ও স্যালাইন পান করতে হবে। * শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন সব খাবার খেতে হবে

* ফাস্ট ফুড, জাংক ফুড, বিরিয়ানি ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

আক্রান্ত হলে করণীয়
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে যথাসম্ভব বিশ্রাম নিতে হবে। ঠাণ্ডা স্থানে থাকতে হবে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং ডিটক্স ওয়াটার পান করতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

অনন্যা/ডিডি

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ