Skip to content

৯ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে নারীর অংশগ্রহণ কমছে কেন

বিশ্বজুড়ে যখন নারীরা তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে যুক্তরাজ্যের মতো একটি উন্নত দেশের চিত্র ভিন্ন। দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণ কমছে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষে সেন্টার অব ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে , গত পাঁচ বছরে আর্থিক খাতে পুরুষের তুলনায় কমেছে নারীর উপার্জন। এছাড়া নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে আর্থিক খাতে কর্মরত নারীর অংশগ্রহণের অনুপাত কমেছে ক্রমাগতভাবে।

১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে যত সংখ্যক নারী কর্মরত ছিলেন, ২৫ বছরের ব্যবধানে অর্থাৎ ২০২২ সালে এসে সংখ্যাটা ব্যাপক আকারে কমেছে। সেন্টার অব ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের তথ্য বলছে, ১৯৯৭ সালে দেশটির আর্থিক খাতে আজকের তুলনায় দুই লাখের বেশি নারী কর্মরত ছিল। এবং ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে প্রায় ৫ লাখ ৮৯ হাজার নারী কাজ করত। যেখানে ২০২২ সালে এসে এটা দাঁড়িয়েছে অর্থাৎ প্রায় ২৫ বছর পর, সংখ্যাটি ৩০ শতাংশেরও বেশি কমে মাত্র চার লাখে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ পূর্বে যেখানে নারীর অংশগ্রহণ ৫৭ শতাংশ ছিল তা বর্তমান কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে! এই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বলা যায়, প্রায় ১২ শতাংশ নারী এখন কর্মহীন হয়েছে!

প্রতিবেদনে আরও দেখানো হয়েছে, ২০২২ সাল থেকে শুরু করে আগের পাঁচ বছরে আর্থিক পরিষেবা কাজের সব স্তরে পুরুষের তুলনায় নারীর উপার্জন কমেছে। অথচ গত ২৬ বছরে এ খাতের নারী কর্মীরা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ১ দশমিক ১২ ট্রিলিয়ন পাউন্ড বা ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার অবদান রেখেছে। তবে বিশ্বের একটি অন্যতম সভ্য এবং উন্নত দেশে নারীর এমন পিছিয়ে পড়া জাতিকে শঙ্কিত করে। তবে আধুনিক যুগের সঙ্গে সঙ্গে যেখানে বিশ্বব্যাপী নারীরা কুসংস্কার ভেঙে বেরিয়ে আসছে সেখানে সভ্যতার আদি নিদর্শনের দেশ যুক্তরাজ্যে এমন ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।

যুগের সঙ্গে যেখানে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে সেখানে যুক্তরাজ্যে নারীদের এমন পরিস্থিতির কারণ কী? নারীরা কাজের অনুকূল পরিবেশ না পেলে ঝরে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে ইউরোপের একটি সভ্য দেশে নারীরা পিছিয়ে পড়লে তা জাতির দুর্ভাগ্য! নারী এবং পুরুষের সম্মিলিত উদ্যোগে একটি দেশের অর্থনীতি সক্রিয় থাকে। তবে যখন পুরুষ বা নারীর মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হয় তখন জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন থমকে যায়। হঠাৎ এ অশনিসংকেত রুখতে হলে দ্রুত নারীদের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

পুরুষ-নারী উভয়ের যোগ্যতার সমান কদর করতে হবে। এবং নারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। যদি নারীরা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ে তবে দেশটির অর্থনৈতিক খাত আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে। তাই নারীকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে। এমনকি পূর্বের তুলনায় আরও বিশেষ সুযোগ – সুবিধা সৃষ্টি করে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা এর নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে নারীরা আবারও অন্ধকার গহীনে তলিয়ে যাবে। তাই এখনই সময় অবস্থার যথাযথ বিশ্লেষণ করে নারীকে কর্মমুখী করে তুলতে হবে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ