Skip to content

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আফগান নারীর অধিকার রক্ষায় বিশ্বকে একজোট হতে হবে

যেকোনো দেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে সে দেশের জনগণ। আর এই জনগণ নারী-পুরুষ উভয়ই। যদি কোনো ব্যক্তিস্বার্থে বা কূপমন্ডুকতা থেকে নারী-পুরুষের বিভেদ সৃষ্টি করা হয়, তবে নিশ্চিতভাবেই সে দেশের উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে। যেখানে বহির্বিশ্বের অসংখ্য দেশ নিজেদের উন্নয়নের দিকেই শুধু মনোযোগী হয়েছে। সেখানে কিছু উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশ নিজেদের গোঁড়ামি, কুসংস্কার, প্রথার জেরে লিঙ্গভেদে নারী-পুরুষের জন্য ভিন্ন জীবনবিধান সৃষ্টি করেছে। নানাভাবে নারীকে পদানত রাখার চেষ্টা করছে।

একইসঙ্গে নারীকে ঘরে আবদ্ধ রাখতে শিক্ষাখাতে, চাকরিতে কোথাও-ই অংশগ্রহণ করতে দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে। নিপীড়ন এবং দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সবেচেয়ে ভয়াবহ তালেবান নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া, এনজিওতে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এমনকি পার্কেও বেড়াতে যেতে পারবে না। বহির্বিশ্বের অনেক দেশই তালেবান নারীদের এমন নিপীড়ন, নির্যাতনের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারির ১৮ তারিখের দিকে জাতিসংঘের সিনিয়র কর্মকর্তারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পৌঁছে। তবু তালেবান নারীদের ওপর কোনোভাবেই যেন নিপীড়ন থামানো যাচ্ছে না!

তালেবানদের গোঁয়ার্তুমি যদি এভাবে চলতেই থাকে তবে দেশটি সামগ্রিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঠিক তেমনই বহির্বিশ্বের অনেক দেশ বিশেষত মুসলিম প্রধান দেশগুলো তালেবানদের অনুকরণীয় হয়ে উঠতে পারে! ফলে এখনই সময় নারীদের প্রতি এমন বিরূপ পরিবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। নারীদের যোগ্য মূল্যায়ন করা। তাদের শ্রদ্ধা-সম্মান-স্বীকৃতি দেওয়া।

বর্তমান সময়ে নারীদের ওপর নিপীড়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে আফগানিস্তান। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসা থেকে একের পর এক নারীরদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। নারীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে ছিটকে পড়েছে। যারা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো সেই নারীরাও ঘরে অবরুদ্ধ । এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের বৈঠকেও তেমন একটা সুফল চোখে পড়ছে না। নতুনভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র।

আফগানিস্তানে নারীদের কর্মসংস্থান ও শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বুধবার (১ জানুয়ারি) তালেবানের বিরুদ্ধে নতুন করে ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে দেশটির বর্তমান বা সাবেক তালেবান সদস্য, বেসরকারি নিরাপত্তা গ্রুপের সদস্যদের এবং আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের নিপীড়নের জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নতুন করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নারীদের সুদিন ফিরিয়ে দিতে ওয়াশিংটন মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

২০২৩ সালের আগস্টে তালেবান সরকারের ক্ষমতায় আসার ২ বছর পূর্ণ হবে। তবে তালেবানদের ক্ষমতায় আসার পর দেশটির উন্নয়ন নিয়ে তেমন কোনো দৃশ্যমান আলোচনা বহির্বিশ্বের নজর কাড়েনি। বরং তারা শোষণ-শাসনে ব্যস্ত। তাও নারীনিপীড়ন। নারীর ওপর নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা। শুধু লিঙ্গভেদে নারীকে পদানত রাখতে নারীকে অধিকার বঞ্চিত করেছে তালেবানরা। এখনই সময় সমগ্র বিশ্বের কল্যাণার্থে নারীদের যথার্থ স্বীকৃতি দেওয়া। এই লক্ষ্যে আফগান নারীদের রক্ষায় এখনই বিশ্বকে একজোট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, নারীমুক্তিতেই মানবজাতির মুক্তি।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ