Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভদ্র নারীর সামাজিক পরিচিতি

সংসার করবে মেয়ে-ছেলে। কিন্তু ‘বউ-জামাই’ নির্বাচন করে মা-বাবা, ভাই-বোন বা আত্মীয় স্বজন। তাদের চোখে প্রথম পছন্দ আইডি লক করা প্রোফাইল, ছবি থাকলেও তার মাথায় থাকবে ফুল কপির মতো হিজাব। প্রোফাইলে ছবি থাকবে না। ফুল, পাখি, প্রাকৃতিক দৃশ্য এসব থাকলে সে ভদ্র মেয়ে। অথবা মেয়েটি মাথায় কাপড় দিয়ে বেড়ায়। নামাজ পড়ে, কোরআন পড়তে জানে। মেয়েটির ধার্মিক মনোভাব আছে ও তা পালন করে।

কিন্তু যারা ধার্মিক না তারা কি খারাপ নারী? যারা সংস্কৃতিমনা, মুক্তমনা; তাদের সমাজের মানুষ ভাবে সহজপ্রাপ্য।

এদেশের ধর্মীয় আর সংস্কৃতি হলো খোলামেলা মেয়েরা নষ্ট হয়। যেমন খোলা খাবারে মাছি বসে; হায়রে কি যুক্তি? তাদের মতে প্রকাশ্যে বেশি আসাটা ঠিক না। কেন সারাদিন ফেসবুকে ছবি পোস্ট করতে হবে? নারীরা থাকবে আড়ালে, ঘরের ভেতর। সংসার করবে মন দিয়ে, সন্তান জন্ম দেবে, লালন পালন করবে৷ স্বামী সেবা করবে। এ রকম মানসিকতা থেকে সব নারী পুরুষরা বের হতে পারেনি এখনো। যারা পেরেছে তারা নারীটিকে দশ হাতের দুর্গা মনে করে। চাকরি করে সংসারের সব কিছু সামাল দিতে হবে। তবেই সে ভদ্র নারী বা ভালো নারী।

সংসারে নারীর কাজের সহযোগিতা করার মানসিকতা তৈরি হয়েছে গুটিকয়েক হাতেগোনা মানুষের। ঘরের বউয়ের কাজে স্বামী সাহায্য করা দেখলে বলে বউ পাগল।

সতী নারী, ভদ্র নারীরাও সংসার ভাঙছে। তার কারণ তাদের ওপরে দেখানো আচরণ আর ভেতরের কুটিলতা এক না। স্বার্থের জন্য তারা অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে। গ্রামের নারীদের আমরা ভাবি সহজ সরল, চাহিদা কম। কিন্তু তারা এ যুগে পিছিয়ে নেই। শহরের পরিবেশে এসে তারাও জীবনটাকে রঙিন বানাতে ভালোবাসে। যদি বলেন গ্রামের মেয়ে বলে শখ থাকবে না? অবশ্যই থাকবে, কিন্তু কিছু অল্প শিক্ষিত পুরুষ ভাবে, তাদের বউ করে আনলে মুখ বন্ধ করে সংসার করবে।

এ যুগের ভদ্র নারীর সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে জানা যায়, তারা একদিকে হিজাব পরে, অন্যদিকে ঠোঁটে লিপস্টিক, মেকাপ করে, সমালোচনা করে। অন্যের ক্ষতি করে। পোষাকের সামঞ্জস্য নেই। মাথায় হিজাব পরছে, পরনে ওয়েস্টার্ন পোষাক।

হিজাব, বোরখা দিয়ে দেশটা ভরে গেছে। আর এই পোষাকধারী বেশিরভাগই অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের না আছে মানবতা, না আছে সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা। পার্কে বসে প্রেম করার সুবিধার্থে বোরখার আশ্রয় নেয়। যৌন-কেলেঙ্কারিসহ নানা অধরাধে জড়িত তারা। তারাই এসে ভণ্ডদের পক্ষে যুক্তি দাঁড় করছে।

৮০ দশকের ছবি আর এখনকার ছবি দেখলে অবাক হতে হয়। তখনো নারীরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়েছে। নারীরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে। এখন পর্দা করেও ধর্ষণ ঠেকানো যাচ্ছে না। মানুষের চরিত্রের স্খলন ঘটেছে। তাদের এই ভণ্ডামি আচরণকে আমার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।

নিজের মানসিকতা হলো আসল, আমি যদি পর্দা করি তাহলে তা ধর্মীয় বিবিনিষেধ মেনে যেন করি। সারাংশ হলো আমরা ধর্ম, সংস্কৃতি একসঙ্গে পালন করতে গিয়ে ভণ্ডামি করছি।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ