Skip to content

৫ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞানী সেঁজুতিদের পথচলা নিষ্কণ্টক হোক

‘হার না মানা’ মনের কাছে ধরা দেয় বিশ্ব। অর্থাৎ নারীদের চলার পথকে যতই রুদ্ধ করা হোক না কেন, কেউ কেউ এতটাই মনের শক্তিতে এগিয়ে চলেন যে, পৃথিবী একসময় তাকে কুর্নিশ জানাতে বাধ্য হয়। তেমনই একজন নারী সেঁজুতি সাহা। নিজের কর্মদ্যোম দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেটে।

বাংলাদেশের অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা ল্যানসেটের স্বীকৃতি পেয়েছেন। এ বিষয়ে প্রোফাইল প্রকাশ করে ল্যানসেট করোনাভাইরাস প্যাথোজেন এবং চিকুনগুনিয়ার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে তার ভূমিকা বর্ণনা করেছে। তিনি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালক। ল্যানসেট যখন তার প্রোফাইল তৈরি করার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তখন তিনি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি। এ বিষয়ে তিনি জানান ‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম কেউ মনে হয় প্রতারণা করতে আমাকে ফোন দিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য চায়। কিন্তু পরে দেখলাম এটা সত্যি! এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেলো যে বিশ্ব আমাদের কাজ দেখে।’

কিভাবে থাইরয়েড ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই সেঁজুতিকে বাংলাদেশে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করেছে, তা তুলে ধরেছে ল্যানসেট। তার দৃঢ় সংকল্পের উদাহরণ হিসেবে ২০১৮ সালে সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য অনুদান ও মেশিন পাওয়ার কথাও উল্লেখ করে সাময়িকীটি।

তার উদ্ধৃতিতে ল্যানসেটে উল্লেখ করা হয়, ‘আমি বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছিলাম, বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকেই সিকোয়েন্স করা যায়। এই কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে নমুনা পাঠানোর দরকার নেই। আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, সেখানেই সিকোয়েন্স করতে পারেন। বাংলাদেশে ছোট সিকোয়েন্সিং মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা সেটি করে দেখিয়েছি।’ ওয়েবসাইটে আরও উল্লেখ করা হয়, সেঁজুতি এবং তার নেতৃত্বে কাজ করা জিনোমিক্স দল ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ বাংলাদেশের শিশুদের আক্রমণ করে এমন ভাইরাস সিকোয়েন্স ও গবেষণা করেন।

আধুনিক যুগে এসেও যে সময় নারীরা পারিবারিক, সামাজিক সহিংসতার শিকার প্রতিনয়িত সেই সময় সেঁজুতি সাহাদের অর্জন আপামর নারী সমাজে আশার আলো দেখায়। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা হয়ে ওঠে। সেঁজুতি সাহাকেও এ সমাজে প্রতিনিয়ত নানা বাধা-বিঘ্ন পাড়ি দিতে হয়েছে। কখনো কখনো হার মানতে ইচ্ছে হয়েছে। কিন্তু আবার দ্বিগুণ মনোবলে নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকেছেন। পথকে আঁকড়ে ধরেছেন, যেন দেশের জন্য সুনাম অর্জন করতে পারেন।

নিজের নাম বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে পারেন। দেশের গণ্ডিতে নারীর এমন অর্জন সত্যিই প্রশংসার একইসঙ্গে নারী শক্তির জাগরণ ঘটাতে সহায়ক। তাই সেঁজুতি সাহাদের মতো অদম্য নারীদের পথ চলা অব্যাহত থাক। যাতে সাধারণ নারীরা তাদের প্রেরণায় আলোকিত হতে পারে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ