Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলচ্চিত্রে আমাদের নারী নির্মাতাদের অবস্থান কোথায়?

সিনেমা, বিনোদনের অন্যতম একটি মাধম। একটি দেশের সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে সিনেমা বা চলচ্চিত্র। বছরের সেরা চলচ্চিত্র পায় ‘অস্কার’-এর মতো বিখ্যাত পুরস্কার। আবার বিভিন্ন ম্যাগাজিন তালিকা প্রকাশ করে সর্বকালের সেরা ১০০ ছবির। তেমনি একটি ম্যাগাজিন ‘সাইট অ্যান্ড সাউন্ড’।

ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিউটের একটি ম্যাগাজিন এটি। ৯০ বছর বয়স এই ম্যাগাজিন সিনেমার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ১৯৫২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি ১০ বছরে একবার করে ব্রিটিশ পত্রিকা সাইট অ্যান্ড সাউন্ড সর্বকালের সেরা ১০০টি ছবির তালিকা প্রকাশ করে। তারা নির্দিষ্ট নিয়মের অধীনে ভোটগ্রহণ করে সিনেমা নির্বাচন করে। এবারের তালিকায় ১৬৩৯ জনের ভোট নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পেশার এই ভোটাররা তাদের পছন্দের সেরা ১০টি ছবির নাম লিখে ভোট দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে এ তালিকা।

তালিকার প্রথম ১০-এ ‘জিন ডিয়েলম্যান, ২৩ কুয়াই ডু কমার্স, ১০৮০ ব্রুক্সেলস’ ছাড়াও আছে ‘ভার্টিগো’, ‘সিটিজেন কেন’, ‘টোকিও স্টোরি’, ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’, ‘২০০১: এ স্পেস ওডিসি’, ‘ব্যু ট্রাভেল’, ‘মুলহল্যান্ড ড্রাইভ’, ‘ম্যান উইথ আ মুভি ক্যামেরা’ ও ‘সিংগিং ইন দ্য রেইন’।

সাইট অ্যান্ড সাউন্ডের তালিকার প্রথম স্থানে আছে বেলজিয়ামের পরিচালক শ্যানটাল অ্যাকাম্যানের ১৯৭৫ সালের ছবি ‘জিন ডিয়েলম্যান, ২৩ কুয়াই ডু কমার্স, ১০৮০ ব্রুক্সেলস’। ম্যাগাজিনটির ইতিহাসে এই প্রথম কোনো নারী পরিচালকের ছবি প্রথম স্থান অধিকার করল।

এই তালিকার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো যে, নারীরা সব পারে। কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই নারী। এখন পর্যন্ত আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নারীকে দেখেছি বা অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীদের অবদান স্বীকার করেছি। কিন্তু বিনোদন জগতে এই প্রথমবার নারী রচনা করলো অন্যরকম ইতিহাস। বেলজিয়ামের পরিচালক শ্যানটাল অ্যাকাম্যান প্রথমবারের মতো পুরুষদের ছাড়িয়ে প্রমান করলেন তিনিও কম নন। মেধা, মনন, শ্রম, চিন্তা-চেতনা সব দিক থেকেই নারী-পুরুষ সমান।

কিন্তু ভারত উপমহাদেশে এখনো এমন কৃতিত্বের অংশ হয়নি। ‘সাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-এর সেরা ১০০ সিনেমার তালিকায় ভারতীয় উপমহাদেশের একটি সিনেমাই স্থান পেয়েছে। তা হলো সত্যজিৎ রায়ের ‘‌পথের পাঁচালী’আর কোনো সিনেমা এখনো গড়তে পারেনি কৃতিত্ব।

আমাদের বাংলাদেশের সিনে জগতের কথাই বলি। সিনেমায় নারী পরিচালক আছে হাতেগোনা কয়েকজন। তাদের সিনেমা তৈরি করতেও পার করতে হয় অনেক বাধা, শুনতে হয় অনেক কটু কথা। সিনেমা জগৎ খারাপ, এমনটাই শুনতে হয়। আর এই সামাজিক প্রতিবন্ধকতা,ধর্মের দোহাই ইত্যাদি নানা কারণে একজন নারী তার সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটাতে পারে না। ফলে আমাদের বিনোদন জগতে পরিচালক হিসেবে নারীদের অগ্রগতি অংকুরে নষ্ট হয়। আবার আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করার একটি প্রবণতা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। কিন্তু নারীদের যথাযোগ্য সুযোগ দিলে আমাদের দেশের নারীরাও একদিন সিনেমা জগতে নিয়ে আসবে আমূল পরিবর্তন। হয়তো বাংলা সিনেমাকে দেখবো নতুন রূপে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ