Skip to content

রক্ষণশীল কাতারেই নারীরা গড়লেন ইতিহাস

রক্ষণশীল কাতারেই নারীরা গড়লেন ইতিহাস

‘বিশ্বকাপ ২০২২’-এর আয়োজন হয়েছে কাতারে। শুরু থেকে আয়োজন নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় কাতার। এই আসরের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আরব বিশ্বের কোনো দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রক্ষণশীল কাতারে শুরু থেকেই নারীদের উপস্থিতি নিয়ে বেশ আলোচনাও শুরু হয়। বিশ্বকাপের শুরুতেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেখানে নারীদের অনেকটা দূরে রাখা হলো, সেখানে কাতারের মাঠে নারী রেফারিরাই সৃষ্টি করলেন নতুন ইতিহাস।

ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই ভিন্ন ধরনের উন্মাদনা। বিশ্বজুড়ে শুরু হয় নানান আয়োজন। আর বিশ্বকাপের উদ্বোধন মানে জমকালো আয়োজন। যে দেশই এই আয়োজন করুক না কেন নতুনত্বের ছোঁয়ায় নজর কাঁড়ার চেষ্টা করে পুরো বিশ্বের। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের’ সঙ্গে মানানসই এক জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বাগতিক কাতার। তবে তাদের উদ্বোধনে একটি বিষয় পুরো বিশ্বে আলোচনায় আসে, তা হলো নারীদের অনুপস্থিতি। কোনো নারী শিল্পীকে পারফর্ম করতে দেখা যায়নি সেই অনুষ্ঠানে।

বিষয়টি নিয়ে চলেছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলেছেন কাতার নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করেছে, স্রোতের তালে গা ভাসায়নি। আবার কেউ কেউ বিষয়টিকে নারীদের হেয় করে দেখা হয়েছে বলে মনে করেছেন। বিশ্বকাপের এত বড় এক মঞ্চে কোনো নারী শিল্পী পারফর্ম করবে না; তা ভাবতেই পারেননি অনেকে। নারীর জন্য এত বড় এক মঞ্চের দুয়ার বন্ধ করে রাখাটা কতটা যৌক্তিক ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও সরব হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।

শুধু এই বিষয়টিই নয় কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে আসা নারী সমর্থকদের সতর্ক করা হয়েছে পোশাক নিয়ে। খোলামেলা পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে নারীদের। তবে এসব বিষয় খুব একটা পাত্তা পায়নি বিশ্বকাপের উন্মাদনার মাঝে। আবার অনেকেই ভেবে নিয়েছেন কাতারের মতো এমন রক্ষণশীল একটি দেশে বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। তবে এবার একই দেশে একই আসরে সেই রক্ষণশীল দেশের মাঠেই নারীরা ইতিহাস রচনা করলেন।

যে আসরে নারীদের জন্য এতে বাধ্যবাধকতা, সে আসরেই নিজেদের অস্তিত্বের জাগান দিয়ে ইতিহাস রচনা করলেন নারীরা। এই নারী রেফারিরা তাই ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন এবং প্রশংসিত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রধান শিরোনামে উঠে এসেছে তাদের নাম ।

কাতারের আল বায়াত স্টেডিয়ামে জার্মানি বনাম কোস্টারিকা ম্যাচে স্টেফানি বাঁশি বাজিয়ে খেলা শুরুর নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি হলো ইতিহাস। পুরুষদের ফুটবল বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ পরিচালনা করলেন কোনো নারী রেফারি। ফ্রান্সের ৩৮ বছরের নারী রেফারি স্টেফানি নজির গড়লেন। বিশ্বকাপ ফুটবলের ৯২ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। পুরুষ রেফারি নারীদের বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচ খেলিয়েছেন। কিন্তু কোনো নারী রেফারি কখনো পুরুষদের বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলাননি। যদিও নারী রেফারিরা এর আগে পুরুষদের ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। শুধু তাই নয় , প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আসরে পুরুষদের ম্যাচে মাঠের তিন রেফারির দায়িত্বই পালন করেন তিন জন নারী। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন নেউজা ব্যাক ও কারেন ডিয়াজ।

বিশ্বকাপ দেখতে আসা নারী সমর্থকদের সতর্ক করা হয়েছে পোশাক নিয়ে। খোলামেলা পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে তাদের। তবে এসব বিষয় খুব একটা পাত্তা পায়নি বিশ্বকাপের উন্মাদনার মাঝে। আবার অনেকেই ভেবে নিয়েছেন কাতারের এমন রক্ষণশীল একটি দেশে বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। তবে এবার একই দেশে একই আসরে সেই রক্ষনশীল দেশের মাঠেই নারীরা ইতিহাস রচনা করলেন।

পুরো বিশ্বের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে অনেক উন্নতি হলেও নারীদের সঙ্গে বৈষম্য এখনো বিদ্যমান। নারীকে এখনো তার যোগ্য সম্মান দেওয়া হয় না, সমান মেধা থাকা সত্ত্বেও তাকে যোগ্য মনে করা হয় না। বিশ্ব মঞ্চে নারীদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা নতুন কিছু নয়। একই সঙ্গে বাধা ভেঙে এগোনোও নারীদের জন্য নতুন কিছু নয়। তাই তো যে আসরে নারীদের জন্য এতে বাধ্যবাধকতা, সে আসরেই নিজেদের অস্তিত্বের জাগান দিয়ে ইতিহাস রচনা করলেন নারীরা। এই নারী রেফারিরা তাই ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন এবং প্রশংসিত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রধান শিরোনামে উঠে এসেছে তাদের নাম ।