২০২১ সালের অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা গ্রহণ করলেন ১০ কৃতী নারী
দেশের শীর্ষস্থানীয় নারীবিষয়ক ম্যাগাজিন পাক্ষিক অনন্যা কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দশজন কৃতী নারীকে ‘অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা ২০২১’ প্রদান করেছে। এবার অর্থনীতিবিদ, করপোরেট ব্যক্তিত্ব, মঞ্চাভিনেতা ও নির্দেশক, অদম্য সাহসী, বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, আলোকচিত্রশিল্পী, মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক, নারী উদ্যোক্তা ও প্রথম নারী ফিফা রেফারি পেলেন এই সম্মাননা। এছাড়া, বিশেষ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিশিষ্ট নারী পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা ২০২১’ তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সভাপতি পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
সম্মাননা পাওয়া কৃতী নারীদের সাফল্যের প্রশংসা করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন বাধা, চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতাকে পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার যে অদম্য স্পৃহা সেটা তাদের এই সফলতার মূলে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নারী শক্তি অনেক দূর এগিয়ে যাবে সেটাই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কেন না আমরা তার অনেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমাদের চারপাশে দেখতে পাচ্ছি।’
পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘নারীরা নিজের ঘরে নিজের কাজ করে আয় করে তাদের সংসার চালাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীরা কতটা এগিয়ে এসেছে সেটাই প্রমাণ করে এবং তার জন্য তারা প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে।’
অনন্যা সম্মাননা পাওয়া নারীরা বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন উল্লেখ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ছোট একটি দেশ, বিশাল তার জনগোষ্ঠী এবং এদেশের বয়স মাত্র ৫১ বছর চলছে, আর অনন্যার চলছে ৩৫ বছর। এই পর্যন্ত পাক্ষিক অনন্যা ২৮০ জন নারীকে সম্মাননা দিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে আজ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রয়েছেন। আজকে আমাদের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজেও অনন্যা সম্মাননা পেয়েছেন ২০১৩ সালে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ‘অনন্যা শীর্ষদশ’ সম্মানিত করেছে ২৭০ জন কৃতী নারীকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ উল্লেখযোগ্য অনেকেই এই সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এ বছর ‘অনন্যা শীর্ষদশ ২০২১’ সম্মাননা পেয়ে এই তালিকায় যুক্ত হলেন নাজনীন আহমেদ (অর্থনীতিবিদ), বিটপী দাশ চৌধুরী (করপোরেট ব্যক্তিত্ব), ত্রপা মজুমদার (মঞ্চাভিনেতা ও নির্দেশক), শাহিনুর আক্তার (অদম্য সাহসী), সালমা সুলতানা (বিজ্ঞানী), রুদমীলা নওশীন (প্রযুক্তিবিদ), শাহরিয়ার ফারজানা (আলোকচিত্রশিল্পী), সান্ত্বনা রানী রায় (মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক), মোছা. ইছমত আরা (নারী উদ্যোক্তা) ও জয়া চাকমা (প্রথম ফিফা রেফারি)।
এই দশজন ছাড়াও আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন কারুশিল্পী সরত মালা চাকমা। রাঙ্গামাটির তবলছড়ির মাস্টার কলোনিতে ৯০ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সাত বছর বয়সে তার কারুশিল্পে হাতেখড়ি হয়। সরত মালা সারা জীবনে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৬ সালে উইভার্স ফেস্টিভ্যালে তাকে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। এখন তার একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি কম, তবুও অন্য ভালো চোখটি নিয়েই তিনি সেলাইয়ের কাজ করেন।
এবারের অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল বেক্সিমকো, হা-মীম গ্রুপ, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং কার্নিভ্যাল ইন্টারনেট। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দৈনিক ইত্তেফাক, চ্যানেল আই, বিডিনিউজ২৪.কম, দৈনিক কালবেলা। ব্রডকাস্টিং পার্টনার ছিল অধিকার টিভি।