আনোয়ারা সৈয়দ হক ও মৌরি মরিয়ম পেলেন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার
বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য এ বছর এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন প্রবীণ কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং নবীন সাহিত্য শ্রেণিতে এ পুরস্কার পাচ্ছেন মৌরি মরিয়ম। অন্যদিনের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০১৫ সালে পুরস্কারটি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে এবং দেশের নবীন-প্রবীণ কথাশিল্পীদের শিল্প সৃষ্টিতে প্রেরণা জোগাতে প্রবর্তিত হয়। এক্সিম ব্যাংকের সহযোগিতায় পাক্ষিক ‘অন্যদিন’-এর উদ্যোগে অষ্টমবারের মতো এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ১২ নভেম্বর বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারটি দেওয়া হবে। ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও সার্টিফিকেটের পাশাপাশি তাঁদের যথাক্রমে পাঁচ লাখ এবং এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।
আনোয়ারা সৈয়দ হক ছয় দশক ধরে লিখছেন। তার লেখায় বারবার উঠে আসে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু আর মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা। এ ছাড়া নারীজীবনের টানাপোড়েন, নারীর বঞ্চনা ও অবহেলিত জীবন যাপনের কথা তাঁর সাহিত্যের প্রধান বিষয়। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলোও তিনি তুলে ধরেন নিজের লেখায়। আনোয়ারা সৈয়দ হকের জন্ম ১৯৪০ সালের ৫ নভেম্বর, যশোর জেলার মোহনগঞ্জে। তিনি সব্যসাচী লেখক ও কবি সৈয়দ শামসুল হকের সহধর্মিণী।
১৯৫৪ সালে আনোয়ারা সৈয়দ হকের লেখালেখির সূচনা। তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘ছানার নানাবাড়ি’ (১৯৭৬)। প্রথম উপন্যাস ‘তৃষিতা’ (১৯৮২)। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: উপন্যাস ‘সোনার হরিণ’, ‘বাড়ি ও বনিতা’, ‘ভালোবাসার লাল পিঁপড়ে’, ‘কার্নিসে ঝুলন্ত গোলাপ’, ‘সেই প্রেম সেই সময়’, ‘দুই রমণী’, ‘উদয় মিনাকে চায়’, ‘ফিরে যাবার পথ অনিশ্চিত’, ‘নিঃশব্দতার ভাঙচুর’, ‘আমার রেণু’, ‘হে সন্তপ্ত সময়’। বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আনোয়ারা সৈয়দ হক বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০১০) এবং দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক (২০১৯)। এবার কথাসাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার–২০২২’ অর্জন করলেন আনোয়ারা সৈয়দ হক।
তরুণদের মধ্যে পরিচিত লেখক মৌরি মরিয়ম নবীন শাখায় পুরস্কারটি পাচ্ছেন তার ‘ফানুস’ উপন্যাসের জন্য। তার লেখায় মানবিক সম্পর্ক, প্রেম, মান-অভিমান, ভ্রমণ, যাপিত জীবন সমকালের প্রেক্ষাপটে এসব বিষয় মূর্ত হয়ে ওঠে। লেখালেখির সূচনা গল্প-উপন্যাস পড়ার সূত্রে। ‘প্রেমাতাল’, ‘অভিমানিনী’ তার জনপ্রিয় উপন্যাস। বরিশালের গৌরনদীতে জন্ম, তবে মৌরি মরিয়মের বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরে। এটি তার প্রথম পুরস্কার।