শিশু নিরাপদ তো দেশও নিরাপদ
একটি শিশু নিজের ভালো মন্দ বুঝতে পারে না। তার জন্য কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ, তা বুঝে উঠতে পারবে না, এটাই স্বাভাবিক। তাহলে তার হয়ে ভালো মন্দ বুঝবে কে?
শিশু বলতে আমরা ১৮ বছর বয়সের নিচের সবাই বুঝি। অর্থাৎ, একটি ১ বছর বয়সের বাচ্চাও শিশু, একটি ১৬ বছর বয়সের ছেলে বা মেয়েও শিশু। তফাৎটা শুধু বয়সে ও বোঝার সক্ষমতায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশু নিজের ভালো-মন্দ বুঝতে শেখে।
কিন্তু শিশুর বেড়ে ওঠায় পরিবার ও পরিবেশের ভূমিকা ব্যাপক। একটি ১৬ বছর বয়সের শিশু নিজের ভালো যতটা বুঝবে একটি ১ বছর বয়সের শিশু তার কিঞ্চিৎও বুঝবে না। সেই শিশুটির ভালো-মন্দ বুঝতে হবে তার পরিবারকে। শুধু পরিবারই নয়, পরিবারের পাশাপাশি আশে-পাশের পরিবেশকে শিশুটির দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শিশুর বিকাশে আঘাত হানে, এমন কিছু থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে। শিশুর সাথে ঘরে কিংবা বাইরে কেউ অশালীন আচরণ করছে কি না, তা নজরে রাখতে হবে। আর এটা নজরে রাখার ক্ষেত্রে পরিবারের পাশাপাশি আশপাশের মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, পরিবার একা কখনো একটি শিশুর খেয়াল রাখতে পারে না। শিশুরা বাইরে খেলতে যায় কিংবা অন্য শিশুদের সাথে থাকে, এই সময় তার সাথে পরিবারের কেউ না-ও থাকতে পারে। তখন সেই শিশুর খেয়াল রাখতে হবে আশপাশে থাকা মানুষেরই।
শিশুরা বাইরে নিরাপদ নয়, এটা চিন্তা করে শিশুদের ঘরবন্দী করে রাখা উচিত নয়। এতে শিশুর মানসিক বিকাশের সাথে সাথে শারীরিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়। এ-ক্ষেত্রে শিশুকে বাইরে যেতে দিয়ে তাকে নজরে রাখাই ভালো।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের সাথে পরিবার থাকে না। তবে সেখানে আরেকটি পরিবার থাকে, তা হলো শিক্ষক ও সহপাঠীদের নিয়ে। এই সময় শিশুদের সাথে যেন কোনো অনৈতিক কাজ কিংবা অশালীন ঘটনা না ঘটে, তা দেখার দায়িত্ব শিক্ষক ও সহপাঠীদের।
একটি শিশুর সাথে অন্যায় হচ্ছে, দেখে অন্য শিশুটি যেন চুপ করে না থাকে, শিশুর সেই মানসিকতা তৈরি করতে হবে। তারা প্রতিবাদ করতে না পারলেও অন্যায় কিছু দেখলে ভয় না পেয়ে বড়দের বিষয়টি জানানোর কথা বলতে হবে।
বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের খুব অল্পতেই শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। তাই তাদের নিরাপদ রাখতে পরিবার ও আশপাশের পরিবেশকে অন্যদের এগিয়ে আসতে হবে। শিশুরা নিরাপদ থাকলেই দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ থাকবে। কারণ, তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।