Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী শিক্ষার বাতিঘর যে কলেজ

তখন সিরাজগঞ্জ মহুকুমা শহর ছাড়া গ্রামাঞ্চলে কোন কলেজ ছিল না। গ্রামের উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেরা শুধু শহরে ছাত্রাবাস বা মেসে থেকে কলেজে পড়া লেখা করতেন। গ্রামের মেয়ে তো দুরের কথা অসচ্ছল দরিদ্র পরিবারের ছেলেরাও এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। এমন একটি অবস্থায় এলাকার বিদ্যোৎসাহী ও দানশীল ব্যক্তিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালের ১ জুলাই রায়গঞ্জের ঘন বসতি এলাকা চান্দাইকোনায় কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠার পর এলাকার অসচ্ছল পরিবারের ছেলে মেয়েরা বাড়ির ভাত খেয়ে এখানে লেখা পড়ার সুযোগ পেয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করছেন বলে জানাগেছে।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান সেখ জানান- ১৯৭২ সাল থেকে প্রায় ১২ বছর পাঠদানের পর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় থেকে ১৯৮৪ সালের ১ জুলাই ডিগ্রী এবং ২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে ৮টি বিষয়ে কলেজে অনার্স কোর্স চালু হয়। এখন এখানে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। এরিমধ্যে অর্ধেকের বেশিই ছাত্রী।  

কলেজটিতে প্রায় ৪ হাজার গ্রন্থ সমৃদ্ধ বিশাল গ্রন্থাগারসহ রয়েছে ১৫টি কম্পিউটার সমৃদ্ধ একটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রদত্ত ৩০টি কম্পিউটার সমৃদ্ধ আইসিটি কম্পিউটার ল্যাব ও বিশাল খেলার মাঠ। উত্তম পাঠদান, ভাল ফলাফল ও সুদৃঢ় ব্যবস্থাপনার কারণে ২০১৭ সালের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পারফরমেন্স র‌্যাকিংয়ে কলেজটি সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রথম ও রাজশাহী বিভাগে ৬ষ্ঠ স্থান অর্জন করে।

 

নারী শিক্ষার বাতিঘর যে কলেজ

কথা হয় কলেজের দ্বাদশ মানবিক শাখার ছাত্রী রূপালী বালার সাথে। তিনি জানান তার বাবা একজন রিকসাভ্যান চালক। তার বাড়ি উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের বেড়াবাজুয়া গ্রামে। একই শ্রেণির মারুফা ইয়াসমিনের বাবা একজন দিন মজুর। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের তবাড়িপাড়া গ্রামে। ডিগ্রী প্রথমবর্ষের ছাত্রী আরজিনা খাতুন একই উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিমগাছি গ্রামের কৃষি শ্রমিক আশরাফ আলীর মেয়ে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্রী সাথী খাতুনের বাড়ি সীমান্তবর্তী বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ি ইউনিয়নের ররোয়া গ্রামে। তার বাবা হতদরিদ্র মনছের রহমান। সবারই জীবনযাত্রা দারিদ্র সীমার নিচে।

ছাত্রীদের অভিভাবকেরা জানান- তাদের মেয়েরা বাড়ি থেকে পান্তাভাত খেয়ে কলেজে পড়ালেখা করছে। নিজেরা কষ্ট করে সংসার খরচ বাঁচিয়ে ও কলেজ পরিচালনা কমিটির কর্তা ব্যক্তিদের বদান্নতায় মেয়েদের পড়াতে পারছেন। যা চান্দাইকোনা কলেজ না থাকলে সম্ভব হতো না। তারা মেয়েদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে চান্দাইকোনা কলেজটিকে ‘অন্ধকারের সূর্য’ হিসাবে মনে করেন।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ