Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

আজ ১০ জানুয়ারি। বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে জড়িত একটি বিশেষ দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনটিতেই বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম পা দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে। 

বাঙালি জাতি দীর্ঘদিনের পরাধীনতার শেকল ভেঙে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিলো ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। একদিকে বাঙালি জাতি যখন বিজয় লাভ করলো অন্যদিকে জাতির পিতা, সেই স্বাধীন বাংলার স্থপতি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে বন্দী। সেখানে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগ করেন তিনি। পরে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তি লাভ করেন। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লি হয়ে ঢাকা ফেরেন বাংলার এই মহানায়ক।  

ঐদিন ভোর রাতে মুক্তি পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তাঁরা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে।
 

পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি যাত্রা করে দশ তারিখ সকালেই তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রীসভা, প্রধান নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে সংবর্ধনা লাভ করেন। 

অতঃপর ১০ জানুয়ারি বেলা ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছান। এদিন বাংলার মানুষ ভাসছিলেন বাঁধভাঙা আনন্দে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভ করলেও এদিন বাঙালি জাতি পেয়েছিলো চূড়ান্ত  বিজয়ের আনন্দ। বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছিলো। 

আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে সংবর্ধনা জানান। এরপর বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের কারাগারে আটক করে রাখা হয়। একদিকে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে , অন্যদিকে পাকিস্তান সরকারের রোষানলে পড়ে কারাগারে দিন কাটাচ্ছে বঙ্গবন্ধু। অতঃপর  ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপে শেষ পর্যন্ত  বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দেয়া হয়। 

বাঙালির ইতিহাসে যেমন উজ্জ্বল বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস; তেমনি উজ্জ্বল বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।  এদিন বাঙালির পূর্ণ বিজয় লাভের দিন। যার হাত ধরে বাঙালি মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করেছিলো তাকে কখনো ভুলে যায়নি কৃতজ্ঞ জাতি।  তাই প্রতিবছর নানান আয়োজনে পালিত হয় এইদিনটি।

আজ দিবসটি উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে করোনার সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে শুরু করায় কিছু কিছু কর্মসূচি সীমিত পরিসরে পালিত হবে বলে জানা গেছে।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ