ত্বকের প্রধান শত্রু
সুন্দর ত্বক মানে স্বাস্থ্যকর ত্বক। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আমরা কত কিছু ব্যবহার করি। ড্রেসিং টেবিল, ভ্যানিটি আর বেসিনের সামনে একবার চোখ বোলালেই সেসব নজরে পড়বে। ত্বক ভালো রাখতে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। তবে নানা কারণে সেই ত্বক হয়ে উঠতে পারে মলিন। ভেঙে পড়তে পারে ত্বকের স্বাস্থ্য। আপনি যতই ত্বকে ঘষামাজা করেন না কেন, ত্বকের শত্রুদের যদি চিনে না নেন, তবে সে চেষ্টা বৃথা।
জাপানি একটা প্রবাদ আছে, ‘আপনি যা খান, আপনি তা-ই’। কথাটার মানে এ রকম, আপনি যত সতেজ খাবার খাবেন, আপনি ততই সতেজ থাকবেন। আপনাকে ততই সতেজ দেখাবে। অন্যদিকে আপনি যত প্রাণীজ খাবার, ভাজাপোড়া খাবেন, আপনার ত্বকে সেটার নেতিবাচক ছাপ থাকবে।
সিনেমা দেখতে গেলে, পথে ঘাটে চলতে গেলে, এমনকি সিগারেটের প্যাকেটেও লেখা থাকে, ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। ধূমপান, মদ্যপান ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর। ধূমপান ও মদ্যপান করলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সঙ্গে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে ত্বকেও। ক্রমশ ত্বকের টান টান ভাব কমতে থাকে। আর কম বয়সেই পড়ে যায় বলিরেখা।
স্ট্রেস বা টেনশন ত্বকের আরেক শত্রু। আপনি যদি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন, আপনার ত্বকে সেটা ধরা পড়বে। আর নিয়মিত যদি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন, তাহলে সেটা ত্বকে স্থায়ীভাবে প্রভাব ফেলবে।
বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য শহরের ভেতর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। এর অন্যতম প্রধান কারণ দূষণ। তাই ঢাকায় বসবাসকারীদের জন্য ত্বক ভালো রাখা একটা চ্যালেঞ্জই বটে। বাতাসে থাকা নানান ধূলিকণা ও জীবাণু ত্বকের গভীরে পৌঁছে লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। তাই ময়লা লোমকূপে জমে গিয়ে ত্বক মলিন করে তোলে। এর ফলে ব্রণের সমস্যাও হতে পারে। শীতকালে মূলত দূষণের ফলেই ত্বক ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দিনে আমাদের শরীরে চার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। এর অর্ধেকটা আমরা যে খাবার খাই, সেখান থেকে পাই। আর আট গ্লাস পানি খেলেই মোটামুটি পানির চাহিদা পূরণ হয়। অনেক সময় বিরিয়ানি, পোলাও বা এ রকম ভারী খাবার খেলে বেশি পানির প্রয়োজন হয়। কেননা, সেই খাবারগুলো অনেকটা সময় পেটে থাকে বলে এমন খাবার খাওয়া হয় না, যাতে পানির পরিমাণ বেশি। আবার এই খাবারগুলো পরিপাকেও অনেকটা পানি খরচ হয়ে যায়। তবে দিনে দুই লিটার তরল পানির চাহিদা থাকেই। পানি কম খেলে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে।
সূর্যের আলো ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, এটা কমবেশি সবাই জানেন। তবে অতিরিক্ত সূর্যের আলো, বিশেষ করে দুপুরের কড়া রোদ ত্বকের ওপর পড়লে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি আলট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাবে ত্বকের ক্যানসারও হতে পারে।
খুব দ্রুত ওজন বাড়ালে বা দ্রুত ওজন কমালে এর প্রভাব পড়ে ত্বকে। ত্বক তখন পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায় না। তাই ‘নানান ভাষায়’ প্রতিবাদ জানায়।
দিনে আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। সেটা কম হলে সর্বনিম্ন ছয় ঘণ্টা হতে পারে। ছয় থেকে আট ঘণ্টা যদি আপনি না ঘুমান, তাহলে সেটার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আপনার ত্বকে। চোখ ফোলা দেখাবে। চোখের চারপাশে কালো ছাপ পড়তে পারে।
চিনি ত্বকের আরেক শত্রু। চিনি আর তেল যত কম খাবেন, ত্বক ততই ভালো থাকবে।