তার কাছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা ছিলো ভিন্ন!
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বরাবরই মানুষভেদে ভিন্ন হয়। কারো কাছে খোলা সিল্কি চুল সুন্দর আবার কারো কাছে কোঁকড়ানো চুল। কিন্তু টিভির পর্দায় অভিনেতা অভিনেত্রীদের সৌন্দর্যের মাপকাঠি তো পুরোপুরি আলাদাই মনে করেন সাধারণ মানুষ। যেমনটা হয়েছিলো বর্তমান সময়ের বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাপসী পান্নুর সাথে৷ আজ থেকে বেশ কয়েকবছর আগেও তার কাছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা ছিলো বেশ ভিন্ন।
তাপসী স্কুলে পড়ার সেই সময়টাতে পর্দার পেছনে নায়িকাদের সৌন্দর্যের ধরণ প্রায় একই রকম ছিলো। সেখানে কোঁকড়া চুল, ভিন্ন রকমের চেহারার কোনো ঠাঁই ছিল না। আর এ থেকেই ভীষণ মন খারাপ হতো এ নায়িকার। তার নিজের কোঁকড়া চুল থেকে ধারালো মুখমণ্ডল কোনোকিছুই পছন্দ করতেন না তিনি৷
তিনি ভাবতেন টিভির পর্দায় কাজ করার মতো সৌন্দর্য তার নেই। তাই নিজের সৌন্দর্যকে উপলব্ধি না করে পর্দার অভিনেত্রীদেরই ভালোবাসতেন তিনি। অন্যদের চেয়ে দেখতে আলাদা বলে নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগতেন তাপসী পান্নু। এমনকি তার যে কোঁকড়া চুল দর্শকদের সবথেকে বেশি পছন্দের একসময় সেই চুল সোজা করতে ওষুধও ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
ভারতের একটি সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তাপসী বলেন, ‘প্রচলিত নায়িকাদের সঙ্গে আমার একদমই মিল ছিল না। আমার হরিণীর মতো চোখ ছিল না, ছোট্ট সুন্দর নাক ছিলোনা। অভিনেত্রীদের মতো আমার মোহনীয় ঠোঁট, হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়ার মতো রেশমি চুল ছিল না।'
স্কুলে পড়াকালীন দুবার সেলুনে গিয়ে রাসায়নিক দিয়ে চুল সোজা করার চেষ্টা করেছিলেন তাপসী৷ চুলে রাসায়নিক ব্যবহার করতে গিয়ে তার চুল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথাও জানান এই অভিনেত্রী। তাপসী বলেন, ‘সৌন্দর্যের প্রচলিত মাপকাঠিতে আমাকে মাপা যেত না। বছরের পর বছর আমি নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেছি, আর দুঃখজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছি, যতক্ষণ না উপলব্ধি করেছি, আমার যা আছে, সেসবই আমাকে ভালোবাসতে হবে। আজ আমি বুঝি, যদি প্রকৃত অর্থে নিজেকে ভালোবাসা যায়, তাহলে বোঝা যাবে যে এগুলো কত সুন্দর।’
উল্লেখ্য, তাপসী পান্নু প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ২০১০ সালে৷ মডেলিংয়ে সীমিত ভূমিকা রাখার পর, রাঘবেন্দ্র রাও পরিচালিত 'ঝুম্মান্ডি নাডাম' তেলুগু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। এরপর ধীরে ধীরে হিন্দি সিনেমায়ও কাজ শুরু করেন। বর্তমানে বলিউডের সবচেয়ে সফল নারী তারকাদের একজন তাপসী পান্নু। চলতি বছর ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে তাঁর তিনটি ছবি – হাসিন দিলরুবা, অ্যানাবেল সেতুপতি ও রেশমি রকেট। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ৬ টি ছবি। আর এই মুহূর্তে করছেন 'ও লাড়কি হ্যায় কাঁহা' সিনেমার শুটিং।