৮৭ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর অর্জন করলেন ভারাথা
‘শিক্ষার কোনো বয়স নেই’ উক্তিটি সবাই আমরা জানলেও বাস্তবে প্রয়োগ করতে নারাজ। তাই একটু বেশি বয়সে তুলনামূলক কম বয়সে প্রাপ্য হওয়া ডিগ্রি অর্জন আমাদের কাছে সমালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রচলিত প্রথার বিপরীতে গিয়ে ৮৭ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ভারাথা নামের এক নারী।
পুরো নাম ভারাথা শানমুগানাথান। তার বাড়ি শ্রীলঙ্কায়। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তিনি অভিবাসী হিসেবে কানাডায় বসবাস করছেন। ২০০৪ সালে মেয়ের সঙ্গে কানাডায় পাড়ি জমান ভারাথা।
কানাডায় আসার আগে নিজ দেশে কয়েক দশক ধরে চলা তামিল-সিংহলি গৃহযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে ভারাথা ও তাঁর পরিবারকে। মূলত গৃহযুদ্ধের এই ভয়াল অভিজ্ঞতা তাঁকে গৃহযুদ্ধ ও শান্তি অর্জনের প্রক্রিয়া নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনায় উদ্বুদ্ধ করেছে। এখন এসব জ্ঞান তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চান।
কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে নভেম্বরের শুরুতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ভারাথা। তার বিষয় ছিলো ‘শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ ও শান্তি অর্জনের প্রক্রিয়া’। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে ফলিত ভাষাতত্ত্বে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন ভারাথা। আর স্নাতক করেছিলেন ভারতের মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে। শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় ইতিহাস ও ইংরেজি এবং লন্ডনে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ভারাথার। তাঁর মেয়েও ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন।
ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মুখপাত্র গ্লোরিয়া সুহাসিনি জানান, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবচেয়ে বেশি বয়সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থী এখন শ্রীলঙ্কা থেকে আসা ভারাথা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএনকে ভারাথা শানমুগানাথান বলেন, ‘এটি সত্যি মজার। রাজনীতি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার ইচ্ছা আমার দীর্ঘদিনের। অবশেষে আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করেছি।’