অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতায় করণীয়
রক্তশূন্যতাকে ঠিক রোগ বলা যায় না। তবে রোগের কারণ বলা যায়। রক্তশূন্যতা থেকে নানারকম রোগের উৎপত্তি ঘটে। তাই সুস্থ থাকতে রক্তশূন্যতাকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। রক্তশূন্যতা মূলত রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতিকে বুঝায়। বয়স ও লিঙ্গভেদে শরীরে রক্তের হিমোগ্লোবিন যখন নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকে কম থাকে তখন এটাকে বলা হয় অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধের জন্য আগে রক্তশূন্যতার লক্ষণ জানতে হবে। অর্থাৎ কিভাবে বুঝবেন আপনি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন?
রক্তে যখন হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে তখন শরীরে ক্লান্তি ও অবসাদ চলে আসে। ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। রক্তশূন্যতা হৃৎপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ বাড়ায়, শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যায়। অল্প পরিশ্রমেই শরীর হাঁপিয়ে যায়। রক্তশূন্যতার মাত্রা বেশি হলে হৃদপিণ্ডও অকার্যকর হয়ে পড়ে।
এছাড়া ঠোঁটে ক্ষত , জিহ্বায় ঘা হওয়া, চুলের ঝলমলে উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাওয়া; চুল ও নখ ফেটে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণও দেখা দেয়। এর ফলে স্নায়বিক দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে। নারীদের পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে পড়ে৷ এসব লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে আপনি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কি কি কারণে এটি হয়ে থাকে সেটা জানাও জরুরি। বিশেষত ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-১২ ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে। এছাড়া আয়রনের অভাবেও রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী নানারকম রোগ যেমন কিডনি অকেজো, লিভার অকার্যকর, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, আর্থ্রাইটিস, যক্ষ্মার মত রোগের কারণেও হতে পারে রক্তশূন্যতা। নির্দিষ্ট সময়ের আগে লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে গেলেও রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
এবার আসুন জেনে নি রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কি করবেন:
রক্তশূন্যতার লক্ষণগুলো দেখা দিলে প্রথমে এর কারণ নিশ্চিত করতে হবে। সে অনুযায়ী করতে হবে প্রতিকার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আয়রনের ঘাটতিতে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকাকে করতে হবেন আয়রন সমৃদ্ধ। লাল মাংস, গিলা-কলিজা, ছোট মাছ, লালশাক, কচুশাকসহ সবজি-আনাজ আর ফলমূল বেশি খেতে হবে। প্রয়োজন অনুসারে আয়রন ট্যাবলেট, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-১২ ও খেতে হবে।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তশূন্যতায় আয়রন গ্রহণ করা নিষিদ্ধ থাকে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুসারে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রক্তশূন্যতার প্রতিকার করতে হবে।