Skip to content

৫ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের উইমেন বিল্ডিং পিস অ্যাওয়ার্ডের ফাইনালে বাংলাদেশী নারী

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্সটিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি) প্রবর্তিত উইমেন পিস বিল্ডিং অ্যাওয়ার্ডের ফাইনালিস্টদের একজন নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার ও নারী অধিকার আন্দোলনকর্মী রানি ইয়ান ইয়ান। পুরস্কারের ৯ জনের চূড়ান্ত তালিকায় মনোনীত হয়েছেন তিনি। বুধবার (২০ তারিখ) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস জানায়, ইউএসআইপি ৩০টিরও বেশি দেশ থেকে নারী শান্তি-নির্মাতাদের মনোনয়ন পেয়েছিল। জেন্ডার ও শান্তি বিনির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও নেতৃত্বশীল ১৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত  ইউএসআইপির উইমেন বিল্ডিং পিস কাউন্সিল পুরস্কারের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত শান্তি-নির্মাতাদের শান্তি বিনির্মাণে দৃষ্টান্তমূলক অঙ্গীকার ও নেতৃত্ব এবং সহিংস সংঘাতের অবসান ও প্রতিরোধে তাদের মুখ্য ভূমিকা পালনের ভিত্তিতে ফাইনালিস্টদের নির্বাচিত করেছেন। সম্মিলিতভাবে তারা আটটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং চূড়ান্ত মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েক প্রজন্ম ধরে শান্তি বিনির্মাণে কাজ করছে এমন একটি গ্রুপ রয়েছে।  

ইউএসআইপির উইমেন বিল্ডিং পিস অ্যাওয়ার্ড শান্তির জন্য কাজ করছে এমন অনেক নারীর কাছে তাদের কাজ যে গুরুত্বপূর্ণ সেই বার্তাবহনকারী একটি শক্তিশালী প্রতীক' উল্লেখ করে জর্জটাউন ইন্সটিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক এবং ইউএসআইপির উইমেন বিল্ডিং পিস কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্রদূত মেলানি ভারভীর বলেন, এই পুরস্কার দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় নারীদের প্রতিনিধিত্বকে ভুক্তভোগী হিসেবে নয়, নেতৃত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

রানী ইয়ান ইয়ান বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা একজন আদিবাসী মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মী। এছাড়াও তিনি চাকমা সার্কেল চিফের উপদেষ্টা এবং চাকমা জনগণ ও চাকমা সার্কেলের প্রথাগত রানী। পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসী জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা ও নির্যাতন ভোগ করছেন। এর ফলে অনেক আদিবাসী মারাও গেছেন বিভিন্ন সময়ে। ১৯৯৭ সালে একটি শান্তি চুক্তি হলেও এ অঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমি ও বিভিন্ন মৌলিক অধিকারে সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। বহিরাগতদের দ্বারা আদিবাসী নারীদের ধর্ষণ এ অঞ্চলে নিত্য ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব পরিস্থিতিতে রানী ইয়ান ইয়ান আদিবাসী নারীদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা এবং সমাজে তাদের নেতৃত্ব প্রদানে সহযোগিতা করছেন। হুমকি ও জীবনের ওপর হামলা হওয়া সত্ত্বেও রানী ইয়ান বিভিন্ন স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন এবং পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন।

তার কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, তিনি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডসহ আদিবাসী জনগণের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন আইন, জাতীয় নীতিমালা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সংস্কার ও বাস্তবায়নে আদিবাসী জনগণের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ দেখতে চান। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তার বিশ্বাসের প্রতিফলন টেকসই শান্তি ও সমতা জোরদারকরণে তার অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমদর্শিতামুখী কাজের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ