Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতার সাথে গান্ধী চেয়েছিলেন এক অসাম্প্রদায়িক ভারতবর্ষ।

'মহান আত্মা' যেকোনো পরিস্থিতিতেই একজন মহান ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরে। ভারতের জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী।  যার হাত ধরে ভারতবর্ষ ইংরেজ শাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তির আলো দেখে। 

 

তবে এই মহান নেতার স্বপ্ন যে শুধু ভারতবর্ষের স্বাধীনতা ছিলো তা নয়। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের। যেখানে হিন্দু মুসলিম বলে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। সকলে মিলেমিশে একত্রে বসবাস করবে। ইংরেজ শাসনের হাত থেকে ভারতের স্বাধীনতার সাথে সাথে সে স্বপ্নও বিলীন হয়ে যায়, ভারত পাকিস্তান দুটি রাষ্ট্রের জন্মের মধ্য দিয়ে। 

 

স্বাধীনতাত্তোর ভারত দেখার সুযোগও বেশিদিন পাননি মহাত্মা গান্ধী।  মাত্র ছয়মাসের কম সময় পেয়েছেন। একদিন এক প্রার্থনা সভায় যোগ দিতে  যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। নাথুরাম গডসে নামে এক কট্টর হিন্দু ধর্মানুসারী, মুসলিম সম্প্রদায় এবং পাকিস্তানের প্রতি তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের জন্য  ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যা করেন গান্ধীজীকে। 

 

জীবদ্দশায় গান্ধীজী আজীবন দেশ ও মানুষের কল্যাণে,  মানুষের মুক্তির জন্য লড়ে গেছেন। যেসব লড়াই, আন্দোলন – সংগ্রাম  ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গিয়ে শেষ হলেও এর আগেও তিনি আরো নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।  তারমধ্যে,  দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই ছিলো একটি। সেসময় মহাত্মা গান্ধী স্নাতক সম্পন্ন করে একজন আইনজীবী হিসেবে ভারতে আসেন। কিন্তু প্রথম মামলাতেই তিনি হেরে যান এবং তাঁকে এক ব্রিটিশ  কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাকে বের করে দেয়া হয়। 
তখন গান্ধীজী ১৮৯৩ সালের এপ্রিল মাসে দক্ষিণ  আফ্রিকায় একটি কাজ নিয়ে ভারত ত্যাগ করে। সেখানে ট্রেনে উঠতে গেলে গায়ের রঙের জন্য তাঁকে প্রথম শ্রেণির  কামরা থেকে বের করে দেওয়া হয়। 

 

আফ্রিকার এই বর্ণবাদের মনোভাবে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে অহিংস আন্দোলন 'সত্যাগ্রহের' বিকাশের জন্য ইন্ডিয়ান কংগ্রেস অব নাটাল প্রতিষ্ঠা করেন। আফ্রিকাতে জীবনের দীর্ঘ ২১ বছর কাটান তিনি। এ আন্দোলনই মূলত গান্ধীজীকে আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত করে।  সেসময় ভারতীয় লোকজনের ওপর কর আরোপের প্রতিবাদে ধর্মঘট এবং মিছিল করার জন্য তাঁকে গ্রেফতার হতে হয়। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা কর প্রত্যাহার করে  গান্ধীকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। 

 

এরপরে গান্ধীজী ভারতে ফিরে অমৃতসরে এক গণহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু করেন। তিনি ব্রিটিশ শাসকদের সাথে অসহযোগিতার ডাক দেন, এবং ব্রিটিশ পণ্য বর্জনেরও কর্মসূচি নেন। যা সকল শ্রেণী ও ধর্মের মানুষের কাছে সমাদৃত হয়। তবে এজন্য  ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ গান্ধীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে এবং দুবছর কারাবন্দীও রাখে। 

 

নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে গান্ধীজী ভারতে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। হয়ে উঠেছেন ভারতের জাতির জনক।  ভারতের স্বাধীনতা দিবসের পরপর ভারত জাতির জনকের জন্মদিন উদযাপনে মেতে উঠে।

 

১৮৬৯ সালের ২রা অক্টোবর ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজকীয় প্রাদেশিক এলাকা পোরবন্দরে এক অভিজাত পারিবারে গান্ধীর জন্ম। 

তাঁর বাবা ছিলেন প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী। আর মা ছিলেন ভীষণ ধার্মিক।  হিন্দু নৈতিকতা, নিরামিষ ভোজন, ধর্মীয় সহনশীলতা, সহজ-সাধারণ জীবন-যাপন এবং অহিংসার মত গুন গুলোর সঞ্চার হয়েছে মায়ের কাছ থেকেই।  মাত্র ১৩ বছর বয়সে  ১৪ বছর বয়সী স্থানীয় এক কিশোরী কস্তুরবার সাথে গান্ধীজী বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ