বাংলা চলচ্চিত্রের এক ক্ষণজন্মা নক্ষত্র সালমান শাহ
জীবনের পঞ্চাশতম বসন্ত পেরিয়ে আরেকটি নতুন বসন্তে পদার্পণ করতেন বাংলার ক্ষণজন্মা এক নক্ষত্র সালমান শাহ। আজ এই কিংবদন্তি অভিনেতার ৫০তম জন্মদিন।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই গুণী অভিনেতা। তার বাবা ছিলেন কমর উদ্দিন চৌধুরী এবং মা নীলা চৌধুরী। সালমান শাহ পড়াশুনা করেন খুলনার বয়রা মডেল হাইস্কুলে। সেখানে চিত্রনায়িকা মৌসুমী ছিলেন তার সহপাঠী। পরে ১৯৯৩ সালে 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' সিনেমার মধ্য দিয়ে একই সঙ্গে এই জুটির চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।
মৌসুমির সাথে জুটি বেঁধে সিনেমায় অভিষেক হলেও সালমান শাহের সাথে শাবনূরের জুটিকে দর্শক বেশি গ্রহণ করেন। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এই জুটিকে সেরা জুটিও বলা হয়। পর্দায় যেমন এই জুটির রসায়ন দর্শকের মন কেড়েছিলো, তেমনি বাস্তব জীবনেও এই জুটির রসায়ন নিয়ে ছিলো সমালোচনা।
তবে ব্যক্তিজীবনে সালমান শাহ জুটি বাঁধেন নিজের খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরার সাথে। ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সামিরা ছিলেন পার্লার ব্যবসায়ী। সালমান শাহের দুটো সিনেমার কস্টিউমস ডিজাইনার হিসেবেও কাজ করেছেন।
ক্যারিয়ারের মত বৈবাহিক জীবনও দীর্ঘস্থায়ী ছিলোনা। মাত্র পাঁচ বছরের সংসার জীবনের মাথায় ঘটে যায় এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঘটে যায় এক নক্ষত্র বিয়োগ। ১৯৯৬ সালের ০৬ ই সেপ্টেম্বর, সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এই কিংবদন্তি অভিনেতার মৃত্যু সংবাদ। ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও আজও সেই মৃত্যু নিয়ে রয়ে গেছে নানান রহস্য। যে রহস্যগুলো এতবছরেও ছেদ করতে পারেনি কেউ।
চার বছরের কর্মজীবনে মাত্র ২৭ টি সিনেমা দিয়ে সালমান শাহ ঐ প্রজন্ম থেকে এই প্রজন্মের এত এত ভক্ত আর দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছেন যে আজও তার জন্মদিন এলে সম্মান ও ভালোবাসার সাথে তা উদযাপিত হয়। বাংলা চলচ্চিত্র এই কিংবদন্তিকে হারিয়ে এক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা কোন জন্মে শোধ হবে কিনা তার হদিশ কেউ দিতে পারেনা।