ঘরোয়া উপায়ে কিডনির পাথর দূরীকরণ
মানব দেহের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ কিডনি। এটি ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব কল্পনা যায় না। কিডনির কাজ দেহে প্রবেশ করা ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদান ছেকে বের করে দেয়া। দেহে পানি, কেমিক্যাল ও ধাতুর সমতা ঠিক রাখে এই অঙ্গটি। বর্তমান সময়ে কিডনির সবচেয়ে বড় সমস্যা কিডনিতে পাথর। নারী বা পুরুষ যে কেউ এ সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।
কিডনিতে পাথর বা স্টোন হওয়া এখন পরিচিত একটি সমস্যা। প্রথম থেকেই এটি দূর করার চেষ্টা না করা হলে পরবর্তীতে তা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। তবে কিডনিতে পাথর হওয়া মানেই যে অপারেশন করতে হবে তা কিন্তু নয়। বরং প্রাথমিক পরীক্ষার পর পাথরের আকার নির্ধারণ করে ঘরোয়া উপায়েই করতে পারেন এর চিকিৎসা। ঘরোয়া কিছু সহজ উপায়ে দূর করতে পারেন কিডনিতে হওয়া পাথর।
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ:
বমি বমি ভাব বা কখনও কখনও বমি হওয়া।
তলপেটের নিচে এবং কুঁচকিতে ব্যথা হওয়া।
পাঁজরের নিচে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়া এবং এই ব্যথার তীব্রতা ওঠা নামা করে।
প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হওয়া এবং কালচে লাল, লাল কিংবা বাদামি রঙের প্রস্রাব হওয়া।
বারবার প্রস্রাব পাওয়া এবং স্বাভাবিকের তুলনায় প্রস্রাব বেশি পরিমাণে হওয়া।
দুর্গন্ধ ও ফেনার মতন প্রস্রাব। কিডনিতে পাথর বিকাশের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশনের অবদান অনেক। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা কিডনিতে পাথর নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে।
ঘরোয়া উপায়ে যেভাবে পাথর দূর করবেন
প্রচুর পানি পান করতে হবে। খুব ছোট আকারের পাথর দেখা দিলে পরিমাণ মতো পানি পানের মাধ্যমে তা সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তুলসীতে আছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড। এটি কিডনির পাথরকে ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এর রসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট কিডনির স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত ২ বার করে তুলসীর রস খান। সমস্যা দূর হবে।
পাতিলেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম জাত পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ছোট পাথরগুলোকে ভেঙে বের করে। রোজ সকালে পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশ্রিত করে পান করুন অথবা দিনের যেকোনো সময়ে লেবুর রস পান করুন।
ডালিম রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং পাথর ও অন্যান্য টক্সিনকে দূর করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সারাদিনে কতবার এটি পান করবেন তা ঠিক করুন।
আপেল সিডার ভিনিগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর দূর করে এবং ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। আপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। তবে একদিনে ১৬ চামচের বেশি খাবেন না।
মেথি বীজ কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বীজগুলো কিডনিতে জমা কৃত পাথর হ্রাস করে ও কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে। এক কাপ ফোটানো জলে ১ থেকে ২ চা চামচ শুকনো মেথি বীজ দিন। এটি প্রতিদিন পান করুন।
ভুট্টার গুড়া পানির সঙ্গে ভুট্টার তুষ মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। নিয়মিত এই মিশ্রণ খান। ধীরে ধীরে চলে যাবে কিডনির পাথর। এটি প্রস্রাবের সমস্যাও দূর করে।
কালিজিরা বীজ একটি গবেষণা অনুযায়ী, কালিজিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন গঠনে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাধা দেয়। ২৫০ এমএল গরম জলে হাফ চা চামচ শুকনো কালিজিরা বীজ দিন। এটি দিনে দু'বার পান করুন।