Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অ্যালোভেরার যত উপকারিতা

অধিকাংশ মানুষের কাছেই অ্যালোভেরা অনেক উপকারী ও ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত। অ্যালোভেরা দেখতে অনেকটা ক্যাকটাসের মত হলেও এটি আসলে ক্যাকটাস নয়। এটি হচ্ছে লিলি প্রজাতির উদ্ভিদ। অনেক কাল আগে থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই উদ্ভিদটি। অ্যালোভেরা শুধু রূপচর্চার কাজে নয় বরং বিভিন্ন রকম জটিল রোগ নিরাময়ে এটি বেশ উপকারী। অ্যালোভেরাতে ২০ ধরনের খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। আর মানবদেহের জন্য যে ২২ ধরনের এমিনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয়, তার আটটিই অ্যালোভেরাতে পাওয়া। এছাড়া আরও রয়েছে ভিটামিন এ, বি1, বি 2, বি6, বি12, সি এবং ই। অ্যালোভেরার উপকারিতা:

হার্টের সুস্থতায়: 
অ্যালোভেরার জুস হার্টকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে খুবই প্রয়োজন। এই অ্যালোভেরা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এটি আবার ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রন করে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তের মধ্যে অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। আবার এই অ্যালোভেরার দেহের দূষিত রক্ত বের করে রক্ত কণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে দীর্ঘদিন আপনার হৃদপিণ্ড বা হৃদযন্ত্র সুস্থ সবল থাকে।

 

ক্যান্সার প্রতিরোধে:
অ্যালোভেরার মধ্যে রয়েছে অ্যালো ইমোডিন, যা মেয়েদের স্তন ক্যান্সার ছড়ানো প্রতিরোধ করে। এছাড়া আরও অনেক ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে অ্যালোভেরা কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

লিভার ভালো রাখতে:
অ্যলোভেরার শরবত আমাদের হাইড্রেট ও ফাইটোনিট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ করে লিভারকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

 

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে:
অ্যালোভেরায় অ্যালো অ্যামোডিন নামের এক ধরনের উপাদান আছে । যা স্তন ক্যান্সারের বিস্তারকে রোধ করতে পারে। সম্প্রতি এক গবষেণায় প্রকাশিত হয়েছে এ তথ্য।

 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: 
অ্যালোভেরার জুস রক্তে সুগারের পরিমাণ বজায় রাখে ও শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। যদি ডায়াবেটিসের শুরুর দিকে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খাওয়া হয় তাহলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা অনেকাংশে সম্ভব। 

 

মাংসপেশি ও জয়েন্টের ব্যথা প্রতিরোধে: 
অ্যালোভেরা দেহের মাংসপেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এই অ্যালোভেরা জেলের ক্রিম যদি ব্যথার স্থানে লাগানো হয় তাহলে ব্যথা নিমিষে কমে যায়।

 

চর্মরোগ ও ক্ষত সারাতে: 
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক ঔষধিরও কাজ করে থাকে। বিভিন্ন চর্মরোগ ও ক্ষত সারায় এর জন্য এই অ্যালোভেরার জুস খুবই উপকারী। প্রাথমিক চিকিত্সায় অনেক সময় অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়।

 

মুখের ঘা প্রতিকার:
ভিটামিন বি এর অভাবে অনেকের মুখে ঘা হয়, আর এই মুখের ঘা ঠিক করতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকারী। যদি ঘায়ের জায়গায় অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে দেওয়া হয় তাহলে মুখের ঘা ভাল হয়।

 

ক্লান্তি দূরীকরণে: 
দেহের দুর্বলতা দূর করতে অ্যালোভেরার জুস খুবই কার্যকারী। যদি আপনি অ্যালোভেরার জুস নিয়মিত খান তাহলে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে এবং দেহ সতেজ ও সুন্দর থাকবে।

 

ওজন কমাতে: 
অনেক পুষ্টিবিদ ডায়েট লিস্টে অ্যালোভেরা জুস রাখার উপদেশ দিয়ে থাকেন। এর কারণ হল ওজন কমাতে অ্যালভেরা জুস খুবই কার্যকারী। ক্রনিক প্রদাহের ফলে শরীরে মেদ জমে। অ্যালোভেরা জুসের মধ্যে অ্যাণ্টি ইনফ্লামেনটরী উপাদান থাকে যা এই প্রদাহ রোধ করে ওজন কমাতে করতে সাহায্য করে।

 

হজমশক্তি বাড়ায়: 
হজমশক্তি বাড়াতে অ্যালোভেরা জুসের কোন জুড়ি নেই। অ্যালোভেরার জুস অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধ করে, যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। আবার এই অ্যালোভেরা ডায়রিয়া রোগের বিরুদ্ধেও খুব ভাল কাজ করে। 

 

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূরীকরণে: 
অ্যালোভেরার জুসের মধ্যে যে জেল থাকে তার গুন অনেক।  এই জেলের শরবত নিয়মিত খাওয়া হলে পেটের সমস্যা দূর হবে। এছাড়া অ্যালোভেরা জেলে প্রায় ১৯ থেকে ২০ রকম অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা ইনফ্লামেশন, ব্যাকটেরিয়া এবং বুক জ্বালা রোধ করে।  তাই  নিয়মিত পানীয়র তালিকায় রাখতে পারেন অ্যালোভেরার শরবত।

 

অ্যালোভেরা চুল সুন্দর করতে: 
চুল সুন্দর করার জন্য অ্যালোভেরা অন্যতম। অ্যালোভেরার ব্যাবহারে মাথার খুশকি দূর করতে করা হয়। এছাড়া ঝলমল চুলের জন্যে অ্যালোভেরা অনেক উপকারী। তাই চুলের যত্নের জন্য অ্যালোভেরা আপনার নিত্যসঙ্গী হতে পারে।

 

ত্বকের যত্নে:
ত্বককে পরিষ্কার ও হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে অ্যালোভেরা। আর এটির জেল ব্যবহারের ফলে ব্রণের সমস্যাও দূর হয়। অ্যালোভেরা এন্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি ত্বকের যত্নে অনেক উপকারী। এ ছাড়া রোদে পোড়া ভাব দূর করতেও অনেক কার্যকরী অ্যালোভেরা।

 

দাঁতের সমস্যায়:
অ্যালোভেরার জুস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথার জন্য খুবই উপকারী উপাদান। যদি দাঁতে কোন ইনফেকশন থাকে তাহলে তা দূর করে দেয়। নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস যদি খাওয়া হয় তাহলে দাঁতের ক্ষয় অনেকাংশে কমে যাওয়া।

 

মুখের দুর্গন্ধ দূরীকরণে: 
অ্যালোভেরায় মধ্যে আছে প্রচুর ভিটামিন-সি, যা মুখের জীবাণু দূর করে মাড়ি ফোলা ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে।  এই অ্যালোভেরার জেল মাউথ ওয়াশ এর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

 

রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি: 
অ্যালোভেরা হল অ্যান্টি ম্যাইকোবিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদানসমৃদ্ধ একটি গাছ। অ্যালোভেরা জুস নিয়মিত পান করলে শরীরে রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দেহের টক্সিন উপাদান দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ