সেভেন: একটি মার্ডার মিস্ট্রি সিনেমা
মার্ডার মিস্ট্রি ঘরানার অসাধারণ চলচ্চিত্র হচ্ছে সেভেন। ডিটেকটিভ সমারসেট (মর্গান ফ্রিম্যান), যিনি তার ক্যারিয়ারের ইতি টানবে। মাত্র ছয়দিন আছে তার কর্মজীবনের তখন একটি খুনের স্পটে ডাক পড়ে। সেখানেই দেখা হয় তার পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়া তরুণ ডিটেকটিভ মিলসের (ব্র্যাড পিট) সাথে।
হত্যাকাণ্ডটি খুব অদ্ভুত। অদ্ভুত সেই হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে তারা দু’জনেই অবাক। বিশাল আকৃতির দেহের একজন পুরুষ পাস্তার একটি থালাতে মুখ গুজে মরে পড়ে রয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের তথ্যানুযায়ী প্রথমে তাকে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ানো হয়েছে আর তারপর লাথি মেরে পেট ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলতে দেয়ালে লেখা gluttony(অতি ভোজন)শব্দ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় নি। এরকম অদ্ভুত আর অজানা খুনের রহস্য বা উদ্দেশ্য কী হতে পারে?
তার কিছুদিনের মধ্যে দেখা যায় আবারও একটি খুন হয়েছে। আগের খুন আর এখনকার খুনের মধ্যে মিল একটাই তা হলো, খুনি লাশের পাশে একটা শব্দ Greed(লোভ) লিখে দিয়ে গেছে। পরপর সংগঠিত এসব খুনের ধারা দেখে সমারসেটের মনে পড়ে খ্রিস্টান ধর্মের ৭ টি মহাপাপের কথা, যা সর্বোচ্চ পাপ বা ক্ষমার অযোগ্য ধরা হয়। Gluttony(অতি ভোজন), Greed(লোভ), Sloth(অলসতা), Lust(লালসা), Pride(অহংকার), Envy(হিংসা), Wrath(ক্রোধ)। তাহলে কি খুনি কোনো ধর্মীয় শিক্ষা দিচ্ছে? নাকি সে কোন সাইকোপ্যাথ?
ডিটেকটিভ সমারসেট আর মিলস যতই ক্লু পায়, যতই জট খুলে সামনে আগায় তা যেনো আরো ঘোলাটে হয়। একের পর এক খুন হতে থাকে। চলচ্চিত্রের গল্প, অভিনয়, দৃশ্যায়ন দর্শককে শেষ দৃশ্য অবধি চুম্বকের মতো ধরে রাখবে।
হলিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে একেক মুভি একেকটিকে ছাড়িয়ে যায় তাদের গল্প, অভিনয়, সিনেমাটোগ্রাফি দিয়ে। কিন্তু ১৯৯৫ সালে ডেভিড ফিঞ্চারের মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র "সেভেন (Se7en)" দুই দশক পরও এখনো চলচ্চিত্র-প্রেমী ও চলচ্চিত্র-বোদ্ধাদের কাছে প্রিয় একটি চলচ্চিত্র। Imdb Rating মতে Top 250 চলচ্চিত্রের মধ্যে সেভেন চলচ্চিত্রটি ২৬ নম্বরে। চলচ্চিত্রটি তখনকার সময়ে খুবই ব্যবসাসফল হয়েছিলো। ৩৩ মিলিয়ন বাজেটের এই চলচ্চিত্রটি ৩২৭ মিলিয়ন আয় করেছিলো। ১৯৯৬ সালের একাডেমী এওয়ার্ডে "বেষ্ট স্ক্রিনপ্লে" ক্যাটাগরিতে নমিনেশনও পেয়েছিলো।