Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টোকিও থেকে বিদায়!

১৬ দিনে ৩৩টি খেলার ৩৩৯টি সোনার পদকের লড়াই শেষে সমাপ্তি হল টোকিও অলিম্পিকের। ২০৫টি দেশের ১১ হাজারেরও বেশি অ্যাথলেট নিয়ে অনুষ্ঠিত ক্রীড়াযজ্ঞ শেষ হয়েছ দর্শকশূণ্য এক জমকালো সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। আলোর ঝলকানি, বিদায়ের করুণ সুর, আর নতুন অলিম্পিকের হাতছানিতে টোকিওর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে পর্দা নামল ‘দ্য গ্রেটেস্ট শোন অন আর্থে’র।

 

করোনার কারণে দর্শক না থাকলেও অনুষ্ঠানে কমতি আনেনি জাপান। অলিম্পিকে অংশ নেয়া ক্রীড়াবিদদের মার্চপাস্ট, জাপানি তারকাদের গান এবং এর সঙ্গে ক্রীড়াবিদদের আনন্দ নাচ সবাইকে বিমোহিত করে। এর সঙ্গে ছিল চোখ ধাঁধানো লেজার শো। এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় অলিম্পিকের লোগো। জাপানি পারফর্মাররা বিভিন্ন শারীরিক কসরত প্রদর্শন করেন। অলিম্পিক গেমস শুরু হয়েছিল গ্রিসে। সেই দেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে সমাপনীতে গাওয়া হয় গ্রিসের সঙ্গীত এবং তোলা হয় গ্রিসের জাতীয় পতাকা।

 

সমাপনী অনুষ্ঠানেই দেয়া হয় মহিলাদের ম্যারাথনে বিজয়ীদের পদক। পুরুষদের মারাথনের পদকও বিতরণ করা হয় তখন। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষদের ম্যারাথনের পদক বিতরণ করা হয় সমাপনীতে। কিন্তু টোকিও অলিম্পিকে একই মর্যাদা দেয়া হয় মহিলাদের ইভেন্টকেও। পুরুষ এবং মহিলা উভয় ম্যারাথনেই জয়ী হন কেনিয়ার দৌড়বিদরা। পুরুষ বিভাগে কেনিয়ার এলিউড কিপচোগে এবং মহিলা বিভাগে একই দেশের জিপচির পেরেজ স্বর্ণ পদক জয় করেন।

 

অলিম্পিককে কেন্দ্র করে জাপানের রাজধানী টোকিওতে বসেছিল ১১ হাজারেরও বেশি অ্যাথলেটের মিলনমেলা। সাথে ছিল আরো কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। আয়োজক, সম্প্রচারক, স্বেচ্ছাসেবক থেকে শুরু করে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের কর্মযজ্ঞ। বিদায়ী সম্ভাষণে টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মাস্ক পরে অ্যাথলেটরা মার্চপাস্টে অংশ নিলেন। করোনার কারণে ছিল কড়া বিধিনিষেধ। 

 

এবারের টোকিও অলিম্পিককে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই ছিল অনিশ্চয়তা। করোনা মহামারির কারণে একটি বছর পিছিয়ে দেওয়া হল। ২০২০ সালের পরিবর্তে নিয়ে আসা হয় ২০২১ সালে। এবারও গেমস আয়োজন করা যাবে কিনা, তা নিয়ে ছিল সংশয়। কারণ জাপানে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল করোনা সংক্রমণ। অন্যদিকে অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধিতা করে টোকিওর সড়কগুলোতে বিক্ষোভ চলছিল প্রায় প্রতিদিনই। এতকিছু সত্ত্বেও টোকিও অলিম্পিক গেমস আয়োজক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল, জরুরি অবস্থা জারি থাকলেও গেমস আয়োজন করা হবে। অনেক চড়াই উৎরাই এর পর অবশেষে গত ২৩ জুলাই উদ্বোধন হয় টোকিও অলিম্পিকের।

 

উদ্বোধনের পর টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পদকের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন ২০৬ দেশের ১১০৯০ ক্রীড়াবিদ। বিশ্বের নানা প্রান্তের নামী-দামী, অখ্যাত ও বিখ্যাত এ্যাথলেটরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩৩টি খেলার ৫০টি ডিসিপ্লিনের ৩৩৯টি ইভেন্টে। হাই জাম্পে স্নায়ুক্ষয়ী লড়াইয়ের পর কাতারের মুতাজ ইসা বারশিম ও ইতালির জিয়ানমার্কো তামবেরি যৌথভাবে জেতেন সোনার পদক। ফলে টোকিও অলিম্পিকে পদক বেড়ে হয় ৩৪০টি। অলিম্পিকের ১১৩ বছরের ইতিহাসে সোনার পদক ভাগাভাগির ঘটনা এবারই প্রথম।

 

১১৩টি পদক জিতে সেরা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩৯টি সোনা, ৪১টি রুপা ও ৩৩টি ব্রোঞ্জ জিতেছেন মার্কিন ক্রীড়াবিদরা। সর্বশেষ রিও অলিম্পিকেও তাদের দাপট ছিল। ৮৮টি পদক জিতে দ্বিতীয় হয়েছে চীন। রিওতে তৃতীয় হওয়া চাইনিজরা এবার ৩৮টি সোনা, ৩২টি রুপা ও ১৮টি ব্রোঞ্জ জিতেছেন। টোকিও অলিম্পিকে স্বাগতিক জাপান হয়েছে তৃতীয়। ২৭টি সোনা, ১৪টি রুপা ও ১৭টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৫৮টি পদক জিতেছেন জাপানিজরা।

 

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ফ্রান্সের প্যারিসে আবারও বসবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’খ্যাত অলিম্পিক গেমস। এতে ৫০টি ডিসিপ্লিনের ৩৩৯টি ইভেন্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১১ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদ অংশ নেবেন। তবে এ জন্য তাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে তিন বছর।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ