স্কিপিং বা দড়ি লাফ খেলার উপকারিতা
ছেলে বেলায় স্কিপিং বা দড়ি লাফ খেলেননি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। এখনকার সময়ে সেই দড়ি লাফ একটি দারুণ ব্যায়ামে পরিচিত লাভ পেয়েছে। যা আপনি করতে পারেন সকালে কিংবা বিকালের ব্যায়ামে। এটার জন্য বড় কোন জায়গা দরকার হয় না, সামান্য একটু জায়গায় যথেষ্ট । এজন্য স্কিপিং বা দড়ি লাফের মতো হালকা ব্যায়াম, আপনার স্বাস্থ্য ফিট রাখতে আদর্শ কার্যকারী উপায় হতে পারে। দড়ি লাফ খেলার উপকারিতা:
হার্ট ও ফুসফুস সুস্থ-সবল রাখতে
দড়ি লাফের অভ্যাস আপনার হার্ট ও ফুসফুসের কার্য ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকগুণ। নিয়মিত দড়ি লাফের ফলে, হার্ট সারা শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালিত করে। যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও পুষ্টি-উপাদান সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। এছাড়া শ্বাস-প্রশ্বাস আদান প্রদানের ক্ষেত্রেও দম বাড়াতে অনেক উপকারী।
দেহের অতিরিক্ত ওজন ও মেদ কমাতে
দেহের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে দড়ি লাফের জুড়ি নেই। এটি দৌড়ানোর চেয়ে বেশি ক্যালোরি পোড়াতে সক্ষম। তাই নিয়মিত দড়ি লাফের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ওজন, মেদ কমানো সম্ভব। এক ঘণ্টা স্কিপিং-এ ১৩০০ ক্যালোরি খরচ হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে যতটা সম্ভব স্কিপিং করুন এবং আস্তে আস্তে দম অনুযায়ী সময়টা বাড়াতে থাকুন।
মাংসপেশির গঠন সুন্দর ও দৃঢ় করতে
নিয়মিত দড়ি লাফ মাধ্যমে কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত মাংসপেশির গঠন সুন্দর ও মজবুত হয়। তাছাড়া এতে শরীরের উপরের অংশ যেমন হাত ও কাঁধ বলিষ্ঠ হয়। এই ব্যায়ামে হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে এটি অস্টিওপোরোসিস-এর ঝুঁকি কমায়।
কাজে সমন্বয় ও মনোযোগ বাড়াতে
নিয়মিত দড়ি লাফের অভ্যাস করলে শরীর অনেক নমনীয় হয়। এছাড়া শরীরের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে সমন্বয় সাধনে সাহায্য করে। এই ব্যায়ামের সময় মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে তাই যে কোন কাজে মনোযোগ বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
যে কোন ব্যায়ামের মতো দড়ি লাফ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও অনেক ভূমিকা রাখে। নিয়মিত দড়ি লাফ চর্চা করলে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মন থাকে উৎফুল্ল, সতেজ ও প্রাণবন্ত ।
স্কিপিং বা দড়ি লাফ করার আগে যা মনে রাখবেন
১) একটি ভালো মানের স্কিপিং রোপ কিনে অথবা বানিয়ে নিবেন।
২) অনেক বলে, খালি পায়ে স্কিপিং ভালো এতে পায়ের অনেক সমস্যাও ভালো হয়। কিন্তু হঠাৎ করে খালি পায়ে স্কিপিং করলে আঘাত পেতে পারেন। তাই স্পোর্টস জুতা পরে স্কিপিং করাই শ্রেয়।
৩) বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের জন্য ভালো মানের স্পোর্টস ব্রা পরে স্কিপিং করা উচিত।
৪) প্রথমে ধীরে ধীরে স্কিপিং করবেন এবং আস্তে আস্তে গতি বাড়াবেন ।
৫) সমান জায়গায় স্কিপিং করবেন। উডেন ফ্লোর হলে ভালো হয়।
৬) এটি একটি হাই ইনটেনসিটি ব্যায়াম তাই ওয়ার্ম আপ খুবই জরুরী। প্রথমে ৫ মিনিট অবশ্যই ওয়ার্মআপ করবেন।
৭) স্কিপিং করার ক্ষেত্রে প্রথম ১৫ মিনিট স্কিপিং করবেন, তারপর প্রতি ১০-১৫ সেকেন্ড বিরতি।
স্কিপিং বা দড়ি লাফ যেকোন ব্যায়ামের সহজ বিকল্প হতে পারে। নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে মন-মানসিকতা ইতিবাচক হয়ে উঠে । তাই আজই কিনুন বা বানিয়ে নিন স্কিপিং রোপ যেটি হতে পারে, আমাদের সবার নিত্য দিনের শরীর চর্চার ও সুস্থ থাকার আদর্শ উপকরণ।