Skip to content

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাকাশে মহাবিপর্যয় রাশিয়ার!

গত এক দশকে কত শত স্পেস ক্রাফট মহাকাশে গিয়েছে তা সমীকরণিক আকারে বলা অসম্ভব। সকল রাষ্ট্র এই তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে। মহাকাশে উৎক্ষেপণের সময়ে মাঝে মাঝে সৃষ্টি হয় বিপত্তি। কিছুদিন আগে চীন তো পৃথিবীর মানব সত্ত্বাকে এক বিরাট হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল তেমনি রাশিয়া সম্প্রতি এক মহাবিপর্যয় নিয়ে এসেছে।

 

জুলাই মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ পৌঁছায় রাশিয়ার ল্যাবরেটরি মডিউল ‘নাউকা’। ডকিংয়ের পর ভুল করে চালু হয়ে গিয়েছিলো ‘নাউকা’র থ্রাস্টার ইঞ্জিন।

 

অনেক আগে আইএসএস-এ পৌঁছানোর কথা ছিল রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’-এর তৈরি স্পেস মডিউলটির। ‘নাউকা’র মিশন বিভিন্ন কারণে বারবার বিলম্বিত হয়ে অবশেষে বৃহস্পতিবার আইএসএস-এ পৌঁছায়। ডকিং-এর পরই ঘটে ওই ‘মিসফায়ার’-এর ঘটনা। বিবিসি জানিয়েছে, হঠাৎ করে ‘নাউকা’র থ্রাস্টার চালু হয়ে যাওয়ার ফলে আইএসএস-এর স্থানচ্যুতির খবর নিশ্চিত করেছে নাসা।

 

‘নাউকা’-র থ্রাস্টার ইঞ্জিন হঠাৎ করে চালু হয়ে যাওয়ার ফলে আইএসএস-এর অবস্থান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অকার্যকর ছিল প্রায় এক ঘণ্টা। বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনটিতে আছেন বিভিন্ন দেশের সাত নভোচারী। তাদের সঙ্গে নাসার যোগাযোগ ছিল না ১১ মিনিট। তাৎক্ষণিক ভাবে ওই ঘটনাকে “স্পেস ইমার্জেন্সি” বলে ঘোষণা করে নাসা কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তদন্তে এক সঙ্গে মাঠে নেমেছে নাসা ও রসকসমস। তবে ওই ঘটনায় নাসার নভোচারীরা কোন ঝুঁকিতে পড়েননি বলে দাবি করেছেন আইএসএস প্রকল্পের প্রধান জোয়েল মন্টালবানো। যদিও একটা পর্যায় নভোচারীদের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে স্পেস স্টেশনের কোথাও কোন ক্ষতি হয়েছে কি না সেটি দেখতে বলেছিল নাসা। 

 

তিনি আরো জানান,“যখন আকস্মিকতা মোকাবেলার সব পূর্বপরিকল্পনা ভেস্তে যাবে, তখনই আপনি দুশ্চিন্তা করা শুরু করবেন, তবে, আজকে আমরা অমন পরিস্থিতিতে যাইনি”। তবে মন্টালবানো এটাও স্বীকার করেছেন যে, আইএসএস-এর ২০ বছরের ইতিহাসে দুর্ঘটনাবশত থ্রাস্টার ইঞ্জিন চালু হওয়ার ঘটনা ঘটেছে  তিন থেকে চারবার। ঘটনার কারণে পিছিয়ে গেছে ক্রুবিহীন ‘বোয়িং স্টারলাইনার’-এর মিশন। শুক্রবার আইএসএস-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার কথা ছিল ‘বোয়িং স্টারলাইনার’-এর। 

 

“ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন দলকে রসকসমসের নাউকা মডিউল পরীক্ষার কাজ চালিয়ে যেতে এবং স্টেশনটি স্টারলাইনারের আগমনের জন্য প্রস্তুত, সেটা নিশ্চিত করতে সময় দেওয়া হচ্ছে " জানিয়েছে নাসা। এই প্রসঙ্গে নাসার ‘হিউম্যান এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড অপারেশন মিশন ডিরেক্টরেট’-এর সহযোগী প্রশাসক ক্যাথি লডার্স জানান, “মহাকাশযাত্রা কঠিন কাজ, আমরা যখন নতুন কোনো্ত্রাংশ নিয়ে আসি তখন ভুল-ত্রুটি হতেই পারে, এ কারণেই আমরা তাদের এমন আকস্মিকতা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করি, প্রশিক্ষণ দেই।”

 

তবে বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনাকে নাসা বড় কোন দুর্ঘটনা হিসেবে আখ্যা দিতে চাইছে না বলে জানিয়েছে বিবিসি। ওই ঘটনাকে ‘বেশ উত্তেজনাপূর্ণ ঘণ্টা’ বলে বর্ণনা করেছে নাসা।

 

সামান্য ত্রুটির কারণে ৭ টি জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারতো।উচ্চতর দক্ষতা, প্রখর মেধার থেকেও সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তার অশেষ করুণায় এ যাত্রায় বেচে যায় তারা। তবে এমন ধরণের মহাকাশ বিপর্যয়ের অন্ত আসলে কোথায়? নাকি সে সমীকরণ কখনোই মেলানো সম্ভব নাহ!

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ