মৃত মাছ মুরগি নিয়ে বিভ্রান্ত!
দৈনন্দিন জীবনে খাদ্য গ্রহণ একটি বড় বিষয়। আর এই খাবারের মূল অংশ আমিষ। আমিষের তালিকায় মাছ মুরগীই যেন নিত্যদিন কার আয়োজন। তবে এখানেই আসে আসল প্রশ্ন ।মরা মাছ খাওয়া গেলেও মরা মুরগী কেন খাওয়া যায় নাহ? বিজ্ঞান কিংবা ধর্ম কোন দিক থেকেই মৃত প্রাণীর অনুমোদন দেয়া হয়নি তবে কেন মরা মাছ খেলে অসুবিধা নেই?
বিষয়টি নিয়ে জানতে আলোচনা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ওষুধ প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ও মুফতি ফয়জুল্লাহর সঙ্গে। তিনি জানান, মরা মুরগির মাংস বিজ্ঞান বা ধর্মীয় ভিত্তিতে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, স্থলভাগের সব প্রাণীই বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে।
যখন কোন প্রাণীকে জবাই করা হয়, তখন তার বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড রক্তের সাথে বের হয়ে যায়। কিন্তু যখন ওই প্রাণীকে শ্বাসরোধ করে মারা হয় বা তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তখন ওইসব প্রাণীর বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড ও রক্ত দেহের ভেতরে মাংসের সাথে মিশে যায়। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সেকারণেই এসব মৃত প্রাণীর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে মাছ পানি থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে, যা কার্বন ডাই অক্সাইড মুক্ত। কেননা মাছ পানি (H2O) থেকে শুধু অক্সিজেন বিশ্লিষ্ট করে গ্রহণ করে এতে কোন কার্বন থাকেনা, এবং শারীরিক প্রক্রিয়ার পরেও কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়না। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে মাছের মৃত্যু হলেও তার ভেতর ক্ষতিকর কোন উপাদান থাকে না। তাই মৃত মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর নয়।
চিনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃত স্থলভাগের জীবের থেকে জলভাগের জীবের স্থায়িত্বকাল বেশি থাকে এবং এসকল জীবের ভিতরে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও বিদ্যমান থাকে না। ফলে এসব গ্রহণ করায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিও থাকেনা।
আহার যোগ্য সামুদ্রিক সব প্রাণী ও জমিনে বসবাসকারী প্রাণীর মধ্যে স্থলে বসবাসকারী এসব প্রাণী মৃত ভক্ষণ করা যায় না। কারণ এদের দেহে প্রবাহিত রক্তের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড থাকায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।
আশেপাশে থাকা বিচিত্র প্রাণীর মধ্যেই বিজ্ঞান লুকিয়ে আছে আনাচে কানাচে। কিছু কিছু সহজ অঙ্কের ও যখন সমাধান মেলে আরেক সূত্রের মালায়। তখন কৌতূহলও যেন নারা দেয় প্রতিদিন কার নিয়মের বাধায়।