Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শবধারের ভিতরে রহস্যে ঘেরা!

রহস্যে ঘেরা এক রাষ্ট্রের নাম মিশর। প্রাচীন সময় থেকেই মিশরের স্থাপত্য দেখে মুগ্ধ হয়েছে পৃথিবী বাসী। মিশরের সকল রহস্য এর সমাধান হয়তো কোনদিনও পুরণ করা সম্ভব নয়। তেমনিই নতুন একটি রহস্য এর জন্ম নিলো।

 

মিশরের প্রত্নতত্ত্ববিদরা আলেকজান্দ্রিয়া থেকে কালো গ্রানাইটের তৈরি বিশালাকৃতির একটি শবাধার উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই শবাধারটি প্রায় দু'হাজার বছরের পুরনো এবং এটি কেউ কখনো খুলেও দেখেনি।

 

এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে শবাধারটিকে ঘিরে ব্যাপক রহস্যের সৃষ্টি হয়। নানা রকমের জল্পনা কল্পনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারদিকে। এমন কথাও শোনা যায় যে ওই শবাধারে কি তাহলে গ্রিক নেতা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের দেহাবশেষ রাখা আছে?

 

এই প্রশ্নের যখন ডালপালা গজাতে শুরু করে তখনই শবাধারটি উন্মুক্ত করেন বিশেষজ্ঞরা। এর ভেতরে পাওয়া যায় তিনটি মানুষের কঙ্কাল। লাল-বাদামী নোংরা পানিতে এসব কঙ্কাল ডুবে আছে। শবাধারটির ভেতর থেকে তখন তীব্র কটু গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।

 

বাড়িঘর নির্মাণ কাজের সময় এই শবাধারটি পাওয়া যায়। এটি খোলার জন্যে তখন মিশরের সরকার প্রত্নতাত্ত্বিকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেয়। মিশরের একটি সংবাদ মাধ্যম আল-ওয়াতান বলছে, শবাধারটির ঢাকনা মাত্র দুই ইঞ্চি উপরে তোলার সাথে সাথেই এর ভেতর থেকে এমন কটু গন্ধ বেরিয়ে আসতে শুরু করে যে প্রত্নতত্ত্ববিদদের পক্ষে আর সেখানে থাকা সম্ভব হয়নি।

 

পরে মিশরের সামরিক বাহিনীর প্রকৌশলীদের সাহায্য নিয়ে শবাধারটি উন্মুক্ত করা হয়। তারা জানান,"আমরা সেখানে তিনজন মানুষের হাড়গোড় পেয়েছি। দেখে মনে হচ্ছে, একটি পরিবারের উদ্যোগেই নিহতদেরকে মমি করে এই শবাধারে রাখা হয়েছিল। তবে মমিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। দেহের মাংস পঁচে গলে রয়ে গেছে শুধু হাড়গুলো," বলেছেন প্রাচীন নিদর্শন সংক্রান্ত সুপ্রিম কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা ওয়াজিরি।

 

তবে মিশরের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র আল-আহরাম বলছে, স্থানীয় লোকজনের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি হয়েছে যে এই শবাধারটির ভেতরে এমন এক ধরনের গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে। এই আশঙ্কায় শবাধারটি যেখানে রাখা হয়েছে সেখান থেকে স্থানীয় লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

 

এরকম প্রাচীন শবাধারে যে ধরনের গ্যাসের সৃষ্টি হয় তা নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা শোনা যায়। এমন কথাও বলা হয় যে শবাধারটি খোলার অভিশাপে লোকজনের মৃত্যুও হতে পারে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলেকজান্দ্রিয়ায় দু'হাজার বছরের পুরনো শবাধারটি থেকে যে তিনজনের কঙ্কাল পাওয়া গেছে তারা ফারাও আমলের সৈন্য হতে পারেন।

 

তারা বলছেন, তিনটি কঙ্কালের একটির মাথার খুলিতে এমন একটি আঘাত আছে যা দেখে মনে হয় যে সেখানে তীরের আঘাত লেগেছিল।

 

বিশাল এই শবাধারটির ওজন ২৭ টন। শবাধারটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে ছয় ফুট। লম্বায় তিন মিটার। বলা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত এরকম যতো শবাধার পাওয়া গেছে তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড়। ৩২৩ খৃস্টপূর্বে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের মৃত্যুর পর যে টলেমেইক যুগের শুরু হয়েছিল ধারণা করা হয় এই শবাধারটি সেই আমলের।

 

মিশরের রহস্য নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রচিত হয়েছে বিভিন্ন বই কিংবা উপন্যাস। সময়ের পরিক্রমায় এখনো অনেক নতুন ধরনের নিদর্শন উন্মোচিত হচ্ছে। তবে কি মিশরের রহস্য চিরকালেই রহস্য রয়ে যাবে?

 

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ