Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘরে ছোটদের অ্যালার্জি সমস্যার সমাধান 

ঘরের ছোট সদস্যরা এমনিতেই অনেক কোমল হয়ে থাকে। তাদের সব সময় রাখতে হয় চোখে চোখে এবং সাবধানে। ছোটদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ হয়ে থাকে। যেহেতু তারা ছোট তাই রোগ তাদের সহজেই কাবু করে ফেলতে পারে। ছোটরা কম বেশি সব অসুখেই ভোগে। কিন্তু এর মধ্যে একটা সমস্যা আছে যেটা প্রায় সব ছোটদেরই হয়ে থাকে এবং খুবই কমন। আর সেটা হল, 'অ্যালার্জি' সমস্যা দেখা দেওয়া। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে বআ কারণে 'অ্যালার্জি' সমস্যা হতে পারে। এটা নিয়ে এতো বেশি চিন্তা না করলেও চলবে। শুধু কিছু বিষয় মেনে চললেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। তাহলে চলুন জেনে  নেওয়া যাক কিভাবে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে হতে পারে এই 'অ্যালার্জি' সমস্যা! 

 

 

খাবারে অ্যালার্জি
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন খাবার থেকে বাচ্চাদের অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক বাবা-মা সন্তানের শরীরে যদি কোন রকম কোন চুলকানি সমস্যা দেখে তাহলে সাথে সাথেই  ডিম, চিংড়ি মাছ, বেগুন ইত্যাদি খাবার খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। তাছাড়া অনেক বাবা-মা তো ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়াই সাথে সাথেই কোন অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খাইয়ে দেন। এতে করে কিছু সময়ের জন্য চুলকানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চুলকানি থেকে আরাম মেলে। প্রায় মানুষের চিন্তা ধারা এমন যে, অ্যালার্জি আছে তাই উক্ত খাবার গুলো খাওয়ানো যাবে না। এতে 'অ্যালার্জি' সমস্যা বাড়তে পারে।

আসলে সবার ধারণাতে কিছুটা ভুল রয়েছে, কেননা সাধারণত খাবার থেকে যদি অ্যালার্জি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ছোটদের বারবার পেট খারাপ হবে। আর এমনটা ই হয়ে আসছে।আবার দেখা যায়, যে সব বাচ্চারা ছোট তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শ্বাসকষ্টও হয়ে থাকে। সাধারণত ডিম, সয়া মিল্ক, গরুর দুধ, সি-ফিশ ইত্যাদি থেকে ছোট বাচ্চাদের অ্যালার্জি সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে তা জানার একমাত্র পদ্ধতি হল, যে খাবারের দিকে আপনার সন্দেহ রয়েছে, সে খাবারগুলো খাওয়ার জন্য টেবিলে রেখে বাচ্চাকে খাইয়ে দেখতে পারেন।টানা ৩দিন সন্দেহবাচক খাবার গুলো মেনুতে রেখে দেখতে পারেন। যদি কোন ধরনের কোন সমস্যা দেখা না দেয় বা অ্যালার্জি সমস্যা না হয় তাহলে বুঝতে হবে উক্ত খাবার দ্বারা বাচ্চার অ্যালার্জি সমস্যা হচ্ছে না।
আবার অনেক ক্ষেত্রে অনেকের ধারনা যে, দুধ বা অন্য দুধের বানানো খাবার থেকে বাচ্চাদের হতে পারে অ্যালার্জি। এটি সব চেয়ে বড় ভুল ধারনা। কেননা দুধের বানানো খাবার থেকে কখনো অ্যালার্জি সমস্যা হয় না বললেই চলে।আপনি চাইলে অনায়াসেই দুধ বা দুধ দিয়ে বানানো খাবার খাওয়াতে পারেন।অনেকে আবার দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন অ্যালার্জি হতে পারে এই ভয়ে। এটা তো একদমই করা যাবে না।আপনি চাইলে বাচ্চার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। এটা খুব সহজ আর খুব ভালো একটা পথ অ্যালার্জি আছে কোন কোন খাবারে তা জানার জন্য। তো আপনি চাইলে করে নিতে পারেন এই পদ্ধতিতে। 

 

পোকা-মাকড়ে অ্যালার্জি

প্রায় সব ছোট বাচ্চারাই পোকা-মাকড় ভয় পায়। এক্ষেত্রে যেসব বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ক্রমশ অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়, তারা সব থেকে বেশি পোকা-মাকড়ের অ্যালার্জি থেকে প্রভাবিত হয়।অনেক সময় বাচ্চাদের হাত ও পা খোলা থাকে। কেননা বাচ্চারা সারাদিন খেলে বেড়ায়। বেশি মোটা কাপড় পড়িয়ে রাখলে সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের গরম লাগতে পারে।তাই তাদের যতটুকু সম্ভব হাত পা খোলা রাখতে হয়।আর তখনই হয় বিপত্তি। অনেক সময় বাচ্চাদের হাত ও পায়ের খোলা অংশে ছোট ছোট লাল লাল গুঁটির মতো হতে দেখা যায়। এগুলো যেমন খুব চুলকায় তেমনি সেরে গেলে সে জায়গা হয়ে যায় কালো কালো ছোপ দাগ। এই অ্যালার্জি সাধারণত ২-৩ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। আবার অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে ৫ বছর পর্যন্তও এই অ্যালার্জির সমস্যা থেকে যায়। 

যদি এই ধরনের অ্যালার্জি  সমস্যা তৈরি হয় তাহলে বাচ্চাদের টানা ৬-১২ মাস বা ২ বছর পর্যন্ত মেট্রিজিন, হাইড্রক্সিজিন বা কিটোটিফেন জাতীয় অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খাওয়ানো উচিত। কিন্তু সেটি করতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই। নিজ থেকে বা অন্যের কথা মত কখনোই এমন কিছু বা এমন কোন মেডিসিন খাওয়ানো যাবে না।

 

ধুলো এবং পোষা প্রাণী থেকে অ্যালার্জি

অনেক বাচ্চারা আছে যারা প্রতিনিয়ত অ্যালার্জি সমস্যায় ভোগে। এদের অ্যালার্জি অনেক বেশি পরিমাণে হয় যার অন্যতম কারণ হল, ধুলো-ময়লা বা পোষা প্রাণী। ধুলো-বালুর মধ্যে অনেক ধরনের জীবাণু আছে, এদের মধ্যে হাউজ ডাস্ট সাইট নামে একটা জীবাণু আছে। যেটি বাচ্চাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালীতে গিয়ে পৌঁছে রক্তের সঙ্গে একদম মিশে যায়। যার কারণে বারবার হাঁচি, শ্বাসকষ্ট এবং অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস হয়ে থাকে বা হতে পারে। 

এর লক্ষণ হল, চোখ লাল হয়ে যাওয়া। চোখ চুলকানো শুরু হয়। চোখ দিয়ে একটানা পানি পড়তে থাকে। অনেকে বাড়িতে শখের বসে অনেক ধরনের পোষা কুকুর, বিড়াল প্রভৃতি পালে। এক্ষেত্রে দেখা যায় পোষা কুকুর, বিড়াল বা অন্য কোন জীবজন্তু থাকলে সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের অ্যালার্জি সমস্যা হয়ে থাকে। এসকল জীবজন্তুর পশম থেকে সবধরনের অ্যাটপিক অ্যালার্জি যেমন অ্যালার্জিক রাইনাটিস ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা বা একজিমা বেড়ে যেতে পারে।

 

সুতরাং যখন দেখবেন অ্যালার্জির সমস্যা হচ্ছে তখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। সেখানে পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিন কি কারণে এমন হচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিন।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ