Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাবিপন্ন গিটারফিশের নতুন প্রজাতি কক্সবাজারে!

মানুষের পছন্দের একটি বাদ্যযন্ত্র হচ্ছে গিটার। পৃথিবীতে খুব কম সংখ্যক মানুষেই আছে যারা গিটার পছন্দ করে নাহ। আপনি কি অবাক হবেন না এমন একটি মাছ সম্পর্কে শুনতে যা কিনা অবিকল গিটারের মত। সম্প্রতি বাংলাদেশের দুই অধ্যাপক কক্সবাজারে গিটার ফিশের একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেন।

 

মাছটি দেখতে অনেকটা গিটারের মতো। কক্সবাজারের যেসব জেলেরা বঙ্গোপসাগরে যান, তারা একে ‘পিতাম্বরী মাছ’ নামে ডাকেন। বাংলাদেশে কালে–ভদ্রে ধরা পড়া মহা বিপন্ন প্রজাতির এই মাছটিকে। বিশ্বজুড়ে মাছটিকে ডাকা হয় ‘জায়ান্ট গিটারফিশ’ নামে। বিশ্বের প্রাণী বিজ্ঞানীরা এতদিন জানতেন, এই জাতীয় মাছের মোট ১১টি প্রজাতি আছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে এই মাছের আরেকটি প্রজাতি পাওয়া গেছে, যা বিশ্বে মাছের প্রজাতিতে নতুন একটি সংযোজন ঘটলো।

 

মাছটি ৭৩০ থেকে ৯৩৩ মিলিমিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য বা লম্বা হয়ে থাকে।  মাছটির শরীরের রং বাদামী এবং ধুসর হয়ে থাকে।

 

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী আহসান হাবিব ও গবেষক মো. জায়েদুল ইসলাম যৌথভাবে মাছটি আবিষ্কার করেছেন। বিশ্বে ৩৪ হাজার ৫০০ প্রজাতির মাছের সঙ্গে এটি একটি নতুন সংযোজন হল।
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীর ওই মাছটির নাম দিয়েছেন ‘বাংলাদেশি জায়ান্ট গিটারফিশ’। 

 

মৎস্য বিজ্ঞানীরা জানান, "গিটার ফিশ মূলত শাপলা পাতা ও হাঙ্গর প্রজাতির মাঝামাঝি এক প্রজাতির মাছ"। এটি মূলত ভারত মহাসাগর, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে পাওয়া যায়। চীন, থাইল্যান্ড, জাপানসহ পূর্ব–এশিয়ার দেশগুলোতে এই মাছের পাখনা থেকে তৈরি করা স্যুপ বেশ জনপ্রিয়। ফলে এই মাছটি ধরা পড়লে বেশ ভালো দামে বিক্রি হয়। যে কারণে খুব দ্রুত এই মাছের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে কমে আসছে।

 

পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং এদের ডিএনএ বারকোডিং গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য মাছটির প্রধান আবিষ্কারক অধ্যাপক কাজী আহসান হাবীব তাঁর পিএইচডি সুপারভাইজার কোরিয়ার সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ইউনহোলির নামে মাছটির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন। 

 

মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম গ্লুকোসটেগাস ইউনহোলি (Glaucostegus younholeei)। মাছটি রাইনোবেটিফরমিস বর্গের, গ্লুকোসটেগিডি ( Glaucostegidae) পরিবারের। এই পরিবারের প্রজাতিগুলোকে জায়ান্ট গিটারফিশ বলা হয়। নতুন এ প্রজাতিটি যোগ হওয়ায় পৃথিবীতে জায়ান্ট গিটারফিশের শনাক্ত হওয়া প্রজাতি দাঁড়াল আটটি। দুটি প্রজাতি ছাড়া বাকি সব সামুদ্রিক লোনা পানিতে থাকে। তবে দুটি প্রজাতি মাঝে মাঝে কিছুটা লোনা পানিতে মাঝে মাঝে বিচরণ করে।

 

এই মাছটি সমুদ্রের কম গভীর এলাকায় থাকে। সমুদ্রের ২০ থেকে ৩০ মিটার গভীরে এটি পাওয়া যায়। ফলে এটি বরশিসহ জালে ধরা পড়ে। ফলে এটিকে রক্ষা করতে হলে জেলেদের সচেতন করতে হবে।

 

কথায় বলে "আমরা  মাছে ভাতে  বাঙালি"। তাই বাঙালির খবরের মাঝেও মাছ থাকবেই। নদীমাতৃক এই দেশে কত প্রজাতির মাছ এখনো আমাদের অজানাই রয়ে গেছে। মাছ পাগল বাঙালি যেন সর্বদাই মাছের খোজে অবিচল।

 

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ