Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারপায়ে ছুটে চলছে লাইব্রেরি! 

করোনার অতিমারিতে সবকিছু শিথিল থাকলেও থেমে আছে পড়াশোনা। ২০২০ সাল  থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ রয়েছে। আর কবে খুলবে তা আজও জানা নেই কারো। তবে কি বন্ধ হয়ে থাকবে পড়াশোনা? তাই কোন এক শিক্ষক এর মনকে ভাবিয়ে তুলেই ছুটে চলছে লাইব্রেরি সবার দ্বারে দ্বারে শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে।

ঠিক গল্পের মত এমনি ঘটছে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত জেলা বেজ এ। যেখানের মানুষের মাঝে না আছে মোবাইল ফোন না আছে নেটওয়ার্ক। সেখানে অনলাইন ক্লাসের কথা ভাবা নিতান্তই আকাশ-কুসুম ছাড়া কিছু নয়। এই অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ এই গরীব। আর মহামারিতে পড়াশোনার হাল যেন ভেঙে পড়ছে প্রায়।এই জেলার একটি স্কুলের প্রধান রহিমা জালাল। তার স্কুল ও রয়েছে বন্ধ।

চিন্তিত করোনার পরিস্থিতিতে থমকে থাকা পড়াশোনা নিয়ে। তবে কি এই জেলার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা থেমে থাকবে? আবার কি শিক্ষায় মুখরিত হবে না এই অঞ্চল?
 

তাই এই রহিমা জালাল ও তার বোন মিলে ভেবে বের করেন এক অভিনব পদ্ধতি। যা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিবে শিক্ষার আলো।এমনি এক আবিষ্কার চলন্ত লাইব্রেরি। যে লাইব্রেরিতে আসতে হবে না। সে লাইব্রেরি ছুটে চলবে পড়াশোনা করা ছেলেমেয়েদের কাছে। 

মরুভূমির জাহাজ খ্যাত উট রোশনই হল সেই চলন্ত লাইব্রেরি। উঁচু-নিচু মরুপথ দিয়ে মুখ তুলে এগিয়ে চলেছে সে। পিঠে কোন সওয়ারি নেই। বরং পিঠের দু’দিকে ঝুলে রয়েছে বই। কোনটা সপ্তম শ্রেণীর, কোনোটা অষ্টম, কোনোটা আবার নবম বা দশম শ্রেণীর। তার নাম রোশন। সত্যিই ঘরে ঘরে ‘রোশনাই’ পৌঁছে দিচ্ছে সে। প্রত্যন্ত গ্রামের আনাচে-কানাচে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়াই তার কাজ।

কবে কোন গ্রামে কি বই নিয়ে হাজির হবে তা আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। এভাবে প্রতি গ্রামে সপ্তাহে দু’দিন করে পৌঁছে যায় সে। প্রতি গ্রামে দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করে সে। এই সময়ে কেউ চাইলে তার পিঠ থেকে প্রয়োজনীয় বই নিয়ে পড়ে ফের ওই দিনই তাকে ফিরিয়ে দিতে পারে। দু’ঘণ্টা পর বইয়ের সম্ভার নিয়ে ফের রওনা দেয় অন্য কোন গ্রামে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রহিমা জালাল এর নাম দিয়েছেন ক্যামেল লাইব্রেরি প্রজেক্ট। তাকে সহায়তা দিচ্ছে ফিমেল এডুকেশন ট্রাস্ট ও আলিফ লায়লা বুক বাস সোসাইটি নামের দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

বেলুচিস্তানে শিক্ষার হার ৫৬ শতাংশ আর নারীদের ২৪ শতাংশ। এই জেলার অধিকাংশ মানুষ গরীব হওয়ায় নেই কোন ইন্টারনেট সুযোগ। সেখানে স্কুল শিক্ষক ও তার বোনের শিক্ষা ছড়িয়ের দেয়ার এই অভিনব পদ্ধতি যেন ফের বই মুখো করতে পারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। সম্ভাবনার নতুন দুয়ারে দাঁড়িয়ে বেলুচিস্তানকে যেন আলোকিত করছেন তারা।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ