Skip to content

৭ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে যৌতুক প্রথার রূপ আজও ভয়ংকর!

যৌতুক প্রথা এমন এক সামাজিক ব্যাধি, যা ছড়িয়ে পড়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সমাজের আনাচে কানাচে সর্বত্রই রয়েছে এর শেকড়।  যুগের পর যুগ ধরে এ শেকড় এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে একে নির্মূল করা দূর, কমিয়ে আনাও হয়ে যাচ্ছে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আর এ ব্যাপারে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চিত্র বেশ হতাশাজনকই বটে।  আধুনিকতার চাদরে ভারত অনেক দূর এগোলেও দেশটিতে যৌতুক প্রথার রূপ আজও ভয়ংকর। 

 

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনি চিত্র। সেখানে বলা হয়েছে যৌতুক বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও গত কয়েক দশক ধরে ভারতের যৌতুক প্রথায় বিশেষ কোন পরিবর্তন আসেনি। বিবিসির একটি প্রতিবেদনে ঐ গবেষণার তথ্যাদি তুলে ধরা হয়। 

 

১৯৬০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৪০ হাজার বিয়ের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণাটি চালানো হয়। এক্ষেত্রে গবেষণায় তুলে ধরা হয় ভারতের ৯৬ শতাংশ লোকের বসবাস এমন ১৭টি রাজ্যের যৌতুকের তথ্য। আর যেহেতু  বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে তাই গবেষণায়  গ্রামগুলোর জরিপে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।

 

গবেষণা শেষে দেখা যায়, এদের মধ্যে ৯৫% ক্ষেত্রেই যৌতুক দেয়া-নেয়া হয়েছে। গবেষণায় কনের পরিবার থেকে বরকে দেওয়া উপহার এবং কনেকে বরের পরিবারের দেওয়া উপহারের মূল্যের ব্যবধান থেকে  যৌতুক বের করা হয়েছে। 

 

যেখানে দেখা যায় ভারতীয় বিয়েতে বরের পরিবার কনের পরিবারকে গড়ে পাঁচ হাজার রুপির উপহার দেয়। অন্যদিকে কনের পরিবার বরের পরিবারকে গড়ে ৩২ হাজার রুপির উপহার দেয়। যার ব্যবধান দাঁড়ায় গড়ে ২৭ হাজার রুপি। তাই গবেষণায় প্রতিটি ভারতীয় বিয়েতে যৌতুকের পরিমাণ গড়ে ২৭ হাজার রুপি বলে ধরা হয়। 

 

হিন্দুপ্রধান ভারতের সমাজে হিন্দু ও মুসলমানদের থেকেও খ্রিস্টান এবং শিখ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যৌতুক লেনদেনের হার অনেক বেশি বলেও গবেষণায় দেখা যায়। আর অঞ্চলভিত্তিক দিক থেকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় ব্যাপকভাবে যৌতুক বেড়েছে বলা হয়। এছাড়াও হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং গুজরাটেও যৌতুকের মাত্রা আশংকাজনক হারেই বেড়েছে। 

 

এছাড়াও গবেষণাপত্রে ২০০৮ সালের পর থেকে ভারতের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক তুলে ধরে বলা হয়, কয়েকবছরে ভারতের অনেক কিছুতেই পরিবর্তন হলেও যৌতুক প্রথায় তেমন পরিবর্তন আসেনি। ভারতের মতো একটি দেশে যৌতুকের বিরুদ্ধে আইন থাকা সত্ত্বেও  কয়েক দশক ধরে কোন পরিবর্তন না আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন গবেষকেরা৷

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ