রক্তে মাখা লোহিত সাগর!
সাগরের নাম শুনলে আমরা সবাই খুশি হই। আমরা ভ্রমণে যেতে চাই। এমন কোন মানুষ পাওয়া দুষ্কর যারা সাগর ভালোবাসে নাহ। কিন্তু লোহিত সাগরের রক্ত রঙ এর পানিতে নামার ক্ষেত্রে সকল মানুষ একবার হলেও ভাববে।
বিস্ময় লোহিত সাগরের দুই পাড়ে ৬ টি দেশের অবস্থান। সাগরটির পূর্ব পাড়ে রয়েছে সৌদি আরব ও ইয়েমেন এবং পশ্চিম পাশে মিশর, সুদান, ইরিত্রিয়া ও জিবুতির অবস্থান। লোহিত সাগরের দক্ষিণ দিকে রয়েছে বাব এল মান্দেব প্রণালী ও এডেন উপসাগর। এই প্রণালী ও উপসাগরের মাধ্যমেই লোহিত সাগর ভারত মহাসাগরের সাথে যুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে সাগরটির উত্তর পাশে রয়েছে সিনাই উপদ্বীপ; সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিম দিকে সুয়েজ উপসাগর ও পূর্ব দিকে আকাবা উপসাগরের অবস্থান।
লোহিত সাগরের গড় গভীরতা প্রায় ১ হাজার ৬০০ ফুট এবং সাগরের মাঝ বরাবর এর সর্বোচ্চ গভীরতা প্রায় ৮ হাজার ২শ ফুট। লোহিত সাগরের প্রায় ৪০ ভাগ অঞ্চল অগভীর সমুদ্র। সাগরটির আয়তন প্রায় ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার। লম্বাটে এই সাগরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১ হাজার ৯শ কিলোমিটার এবং সর্বাধিক প্রস্থ মাত্র ৩৫৫ কিলোমিটার।
লোহিত সাগরে জলে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে, এগুলো বাতাস থেকে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে ট্রিকোডেসামিয়াম রিথ্রিয়াম নামে এক ধরনের অজৈব যৌগ গঠন করে। এর রঙ লাল হওয়ায় এই সাগরের জল লাল দেখায়। এছাড়াও আগ্নেয়গিরির অব্যাহত অগ্নুৎপাতের কারণেও সাগরের জল লাল রঙের হতে পারে। এই রঙ কিছু স্থানে দেখা যায় মাত্র। তাই, এ সাগরের নাম লাল সাগর বা লোহিত সাগর।
সামগ্রিকভাবে যে কেউ লোহিত সাগরের পানির রঙ দেখলে হকচকিয়ে উঠলেও সাগরটি এর ভৌগলিক পরিবেশ, আকার এবং বিচিত্রতায় অনন্য। এজন্যই ভ্রমণ রসিকদের কাছে এ সাগরের মহাত্য ব্যাপক।