Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী সাংবাদিক মেঘার পুলিৎজারপ্রাপ্তি

কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে দরকার কেবলমাত্র  দৃঢ় সংকল্প এবং ইচ্ছাশক্তি। বয়স, লিঙ্গ বৈষম্য কেবলমাত্রই অজুহাত।  প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে সম্ভব অসাধ্যকে সাধন করা। আবারও তা প্রমাণ করলেন মেঘা রাজগোপালন নামের একজন নারী। যিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। নানা বাঁধা আসা সত্ত্বেও যিনি নিজের দায়িত্বে অটল থেকেছেন এবং দিনশেষে সফলতা নামের সেই সোনার হরিণের দেখাও পেয়েছেন। 

 
চীনের উইঘুর মুসলিমদের উপর অমানবিক নির্যাতন পুরো বিশ্বজুড়ে ছিলো আলোচিত-সমালোচিত। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বারংবার উঠে এসেছে ঘটনা। কেউ শুধুমাত্র দায়সারাভাবে একটি খবর প্রকাশ করেছেন কেউ আবার চেষ্টা করেছেন গভীরে গিয়ে অনুসন্ধান করার। আর অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট করতে গিয়ে সাংবাদিকদের বারবার হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। কেউ কেউ হয়তোবা পিছিয়ে এসেছেন সে ভয়ে। 

কিন্তু নানা বাঁধা- বিপত্তি পেরিয়ে নিজের কাজে অবিচল ছিলেন নারী সাংবাদিক মেঘা রাজগোপালন। মেঘা রাজগোপালন ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন সাংবাদিক । তিনি আমেরিকান নিউজ ওয়েবসাইট 'বাজফিড নিউজ' এ কাজ করেন। চীনের উইঘুর মুসলিমদের অমানবিক নির্যাতনের ওপর রিপোর্ট করে এই নারী সাংবাদিক সমাদৃত হয়েছেন বিশ্বজুড়ে। এমনকি সর্বশেষ তার ঝুলিতে যোগ হয়েছে সাংবাদিকতার সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরষ্কার পুলিৎজার।  

 

তদন্তমূলক আন্তর্জাতিক রিপোর্টিংয়ের জন্য মেঘা রাজাগোপালনের তৈরি শিনজিয়াং সিরিজ পুলিৎজার জিতেছে। প্রথম সাংবাদিক হিসেবে চীনের সংখ্যালঘু মুসলিমদের অকথ্য নির্যাতনের কাহিনী পুরো বিশ্বের সামনে মেঘাই তুলে ধরেছিলেন। আর এজন্য তাকে নেহাত কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। তাকে সহ্য করতে হয়েছিল অসহনীয় কষ্ট। তাই এ সম্মান প্রাপ্তির পর বলা যায় মেঘা যেনো তার কষ্টেরই স্বীকৃতি পেলেন। 

শিনজিয়াং প্রদেশে হাজার হাজার উইঘুর মুসলিমদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করে চীনা সরকার। ২০১৭ সালে এই খবর প্রকাশ্যে আসলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। যদিও বেইজিং সরকার এই খবরকে মিথ্যা বলে নাকচ করে দিয়েছিলো। মেঘাই প্রথম সাংবাদিক যিনি সেই সময়ে সশরীরে শিনজিয়াংয়ের সব ডিটেনশন ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। 

বাজ নিউজের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কে জানানো হয়, একাধিকবার মেঘার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। তার ভিসা বাতিল করা হয়েছে এমনকি তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও মেঘা পুরো কাজ টি শেষ করার পরই চীন ছাড়েন। অ্যালিসন কিলিং নামে এক স্থপতি-বিদ এবং প্রোগ্রামার ক্রিস্টো বুশেক মেঘাকে এই কাজে সহায়তা করে। 

সাংবাদিকতার এত বড় সম্মাননা পেয়ে মেঘা আনন্দিত, পুরষ্কার প্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমি পুলিৎজার পাওয়ার আশা করি নি। চীনের নজরদারি সত্ত্বেও সাহস দেখিয়ে যারা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, সাহায্য করেছেন, তাদেরই ধন্যবাদ জনাতে চাই।'

পৃথিবীতে যতগুলো চ্যালেঞ্জিং পেশা রয়েছে নিঃসন্দেহে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো সাংবাদিকতা। আর একজন নারী  যখন এই পেশা বেছে নেন সেই চ্যালেঞ্জ যেনো আরো হাজার গুন বেড়ে যায়। কিন্তু প্রবল ইচ্ছাশক্তির কাছে যে কোনো চ্যালেঞ্জই বড় নয় তা আবারও প্রমাণ করলেন মেঘা রাজগোপালন নামের এই নারী সাংবাদিক।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ