সংকোচ নয় চাই সচেতনতা
সুমির পরিবারের সদস্য তিনজন।জন্মের সময় তার মা মারা যান। পরিবারের সদস্য বলতে আছেন বাবা আর ভাই। সুমি এবার সপ্তম শ্রেণিতে ৷ এবছরই তার প্রথম মাসিক হয়৷ মাসিক সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না সুমির। একদিন তার বাবা তাকে ডেকে নিয়ে মাসিক সম্পর্কে সবকিছু খুলে বললেন। সুমিও বিষয়টা বুঝতে পারলেন৷ আজ সুমির প্রথম পিরিয়ডের দিন তিনি তার বাবাকে বললেন। তার বাবা তার বড় ভাইকে বলে স্যানিটারি ন্যাপকিন এনে দিল।
পিরিয়ড নারী জীবনের একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বয়ঃসন্ধিতে সব মেয়ের মধ্যেই এই পরিবর্তনটি ঘটে। কিন্তু এই সাধারণ পরিবর্তনটাকে আমরা গ্রহণ করতে পারি না। চক্ষুলজ্জার ভয়ে এই কথা কাউকে জানাতে পারি না। কে কি ভাববে? কে কি বলবে? কিভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনবো? এই সংকোচেই জন্যই যেন কেউ খোলামেলা আলোচনাটুকুও করতে চায় না৷
সমাজের অতিরিক্ত রক্ষণশীলতা মনোভাব নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ও মাসিকের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ফলে খুব অল্প বয়সেই সচেতনতার অভাবে নারীদের ভুগতে হয় নানা জটিলতায়। তাই সময় এসেছে এখন দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর। চক্ষুলজ্জা নয় বরং খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে হবে।
পরিবারের সবাই টিভি দেখার সময় যখন পিরিয়ড সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন আসে তখন সেটা চট করে সরিয়ে ফেলার অভ্যাসটাও তৈরি হয়ে গেছে মেয়েদের। কোন মেয়েই তার বাবা বা ভাইকে ন্যাপকিন কেনার কথাটা বলতে পারেন না। আর এমন সচেতন ভাইও নেই যিনি নিজে বোনের জন্য ন্যাপকিন কিনেন। কিন্তু এসব থেকে এখন বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেকে পরিবর্তন করতে পারলেই তো পরিবর্তন হবে সমাজ।
মাসিক নিয়ে আর নয় লুকোচুরি। সমাজে এ বিষয়ে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। অবহেলা করলেই মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। পিরিয়ড কোন খারাপ কিছু নয়, বরং এটার মাধ্যমে একটা নারী সন্তান ধারণে সক্ষম হয়। এটা মানুষকে বোঝাতে হবে। তবেই তো কুসংস্কার ভেঙে সচেতনতা বাড়বে।