Skip to content

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ একসাথে দেখা যাবে সুপার মুন ও সুপার ব্লাড মুন

রাতে এক কাপ চা হাতে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখার থেকে সুখকর জিনিস বোধহয় খুব কমই হয়। অনেক চন্দ্রপ্রেমীদের তো আবার মনে হয়, ইসস! যদি ঘরের ছাদটা তুলে দিয়ে চাঁদ দেখতে দেখতে ঘুমোতে পারতাম! যাই হোক, ঘরের ছাঁদ না তুলতে পারলেও আজ চন্দ্রপ্রেমীদের জন্য রয়েছে একটি সুখবর। আজ একইসাথে ঘটতে যাচ্ছে তিনটি বিরল মহাজাগতিক ঘটনা। 

আজ বছরের প্রথম পূর্ণ চন্দ্রগ্রাস হতে যাচ্ছে।  শুধু তাই নয় একইসঙ্গে রাতে দেখা মিলবে সুপার মুন ও সুপার ব্লাড মুনের। পূর্ণগ্রাস এবং বিশাল আকৃতির এমন চাঁদের একসাথে দেখা মেলেনা সহজে। অন্যদিনের তুলনায় চাঁদকে আজ দেখা যাবে ১২ শতাংশ বড় ও বেশ উজ্জ্বল। আজ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসবে চাঁদ। 

চলুন তবে এবার এই তিনটি বিষয়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানা যাক। সূর্যকে কেন্দ্র করে চারদিকে ঘুরপাক খায় পৃথিবী। আর পৃথিবীকে কেন্দ্র করে নিজের নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরপাক খায় চাঁদ। যে যার নিজের পথে ঘুরতে ঘুরতে যখন চাঁদ ও পৃথিবীর মাঝে সূর্য চলে আসে তখন হয় পূর্ণিমা। আর পূর্ণিমার দিনে যদি সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী কোনোভাবে এক সরলরেখায় চলে আসে  তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপরে পরে। অর্থাৎ চাঁদ পৃথিবীর ছায়া কোনেই ঢুকে পরে ।

কখনো সেটা হতে পারে আংশিক ভাবে আবার কখনো হতে পারে পুরোপুরিও। যখন পৃথিবীর ছায়াকোনে চাঁদ আংশিকভাবে ঢুকে যায় তখন তাকে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ বলে। আর ছায়াকোনে চাঁদ পুরোপুরি ঢুকে গেলে তখন বলা হয় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। পূর্ণগ্রাসে চাঁদ পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি চলে আসে। ফলে চাঁদকে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বড় দেখাবে।

 

চাঁদ যে পথে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরপাক খায় তা অনেকটা উপবৃত্তাকার। ফলে চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরপাক খেতে খেতে কখনো পৃথিবীর খুব কাছাকাছি  চলে আসে আবার কখনো দূরে চলে যায়।  যখন চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি চলে আসে, সেসময় চাঁদকে আরো বড় ও উজ্জ্বল দেখায়। এই ঘটনাকেই বলা হয় সুপারমুন৷ 

সর্বশেষ ব্লাডমুন ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি দেখা গিয়েছিল । ব্লাডমুনের ব্যাপারে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হল – পূর্ণগ্রাসের সময় সূর্যের আলো চাঁদের গায়ে পরেনা। যার কারণে চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ায় ঢুকে যায় কিন্তু সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের স্তরেই পরে।

আমরা জানি সূর্যের সাদা আলোর সাতটি রং আছে। এর মধ্যে বেগুনী নীল রংয়ের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম। কাজেই এই রংয়ের আলোকরশ্মি বায়ুমণ্ডলে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। তাই এই রংয়ের আলো চারদিকে বেশি ছড়িয়ে পরে। অন্যদিকে লাল ও কমলা এই দুই রংয়ের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি৷ আর তাই এই আলো বায়ুমণ্ডলে কম বিচ্ছুরিত হয়। তাই আলো বেশি ছড়িয়ে পরতে পারেনা। 

আর তখন বায়ুমণ্ডলে এই দুটো আলোকরশ্মির প্রতিসরণ হয়। এই প্রতিসরণের ফলে সে আলোর কিছুটা বেঁকে গিয়েই চাঁদের গায়ে পরে। তাই মনে হয় চাঁদের গায়ে লাল রং লেগে আছে। আর এসময়ই চাঁদকে ব্লাড মুন বলা হয়। আর যেসময়ে যদি চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছে অর্থাৎ সুপার মুন হয়ে থাকে তখন তাকে সুপার ব্লাড মুন বলা হয়।

আজ এই বিরল ঘটনার পুরোপুরি সাক্ষী হতে পারবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, অষ্ট্রলিয়া, ওশেনিয়া, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ এলাকা, মেক্সিকো, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ আরো কিছু দেশ। ভারতের কিছু এলাকায়ও পুরোটা না হলেও আংশিক দেখা যাবে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ