ফেসওয়াশ ছাড়াও , ত্বকের বহু সমস্যা দূর করবে ডবল ক্লিনজিং
ত্বকের যত্নে নতুন নতুন পদ্ধতি ও পণ্য ব্যবহার আজকাল খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে কিছু প্রাচীন পদ্ধতিও ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। তেমনি একটি পদ্ধতি হলো ডবল ক্লিনজিং। সাধারণত ফেসওয়াশ ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করা হলেও, এই ডবল ক্লিনজিং পদ্ধতি ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা, তেল এবং মেকআপ দূর করতে অনেক বেশি কার্যকর। যদি আপনার ত্বকেও সমস্যা থাকে যেমন ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, অতিরিক্ত তেল বা মেকআপ পরিষ্কার না হওয়া, তাহলে ডবল ক্লিনজিং পদ্ধতি আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
ডবল ক্লিনজিং কী?
ডবল ক্লিনজিং একটি ত্বক পরিষ্কারের পদ্ধতি, যেখানে দুটি ধাপে ত্বক পরিষ্কার করা হয়। প্রথমে তেলভিত্তিক ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা হয়, তারপর জলভিত্তিক ক্লিনজার দিয়ে ত্বক আরও ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়। এই পদ্ধতি ত্বকের গভীরে থাকা ময়লা ও তেল দূর করে, ফলে ত্বক হয়ে ওঠে অনেক বেশি মসৃণ এবং স্বাস্থ্যকর।
ডবল ক্লিনজিং পদ্ধতির ধাপসমূহ
প্রথম ধাপ
প্রথমে তেলভিত্তিক ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে, যা ত্বক থেকে মেকআপ, সানস্ক্রীন, অতিরিক্ত তেল এবং ধূলিকণাও দূর করে। তেল ক্লিনজার ত্বকে গভীরে প্রবেশ করে ময়লা তুলে দেয়, এবং ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে। যারা ত্বকে মেকআপ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী, কারণ এটি খুব সহজেই মেকআপ তুলে ফেলে।
দ্বিতীয় ধাপ
তেল ক্লিনজিংয়ের পর, জলভিত্তিক ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিৎ। এটি ত্বকের উপর অবশিষ্ট তেল এবং ময়লা দূর করতে সাহায্য করবে। জলভিত্তিক ক্লিনজার সাধারণত ত্বককে পরিষ্কার এবং সতেজ রাখে। এই ধাপটি ত্বকের পোর্সকে মুক্ত করে, যাতে কোন ময়লা বা ব্যাকটেরিয়া জমতে না পারে।
ডবল ক্লিনজিং-এর উপকারিতা
গভীর পরিষ্কার
সাধারণ ফেসওয়াশ ত্বকের বাইরের ময়লা এবং তেল পরিষ্কার করতে পারে, কিন্তু ডবল ক্লিনজিং পদ্ধতিতে ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা, তেল এবং ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণভাবে দূর হয়। এটি বিশেষভাবে ত্বকের গহীনে ব্ল্যাকহেডস এবং ব্রণ হওয়ার প্রবণতা দূর করে।
তেল ও মেকআপ পরিষ্কার
ডবল ক্লিনজিং ব্যবহারের মাধ্যমে মেকআপ, সানস্ক্রীন বা অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার হয়ে যায়, যা ফেসওয়াশ দিয়ে সঠিকভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।
অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ
যারা ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন দেখতে পান, তাদের জন্য ডবল ক্লিনজিং ত্বকের তেলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। তেলভিত্তিক ক্লিনজার ত্বককে অতিরিক্ত শুকিয়ে না দিয়ে তেল দূর করে, যার ফলে ত্বক অয়েলি হয়ে ওঠে না।
ব্রণ ও ত্বকের সমস্যা কমানো
ত্বকে জমে থাকা ময়লা এবং তেল ব্ল্যাকহেডস ও ব্রণের সৃষ্টি করে। ডবল ক্লিনজিং নিয়মিত ব্যবহারের ফলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে যায় এবং ত্বক পরিষ্কার ও এক্সফোলিয়েটেড থাকে।
ডবল ক্লিনজিং পদ্ধতি ব্যবহার করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখুন
প্রথমে তেলভিত্তিক ক্লিনজার এমন একটি বেছে নিন যা আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী উপযোগী।
দ্বিতীয় ধাপে এমন জলভিত্তিক ক্লিনজার ব্যবহার করুন যা ত্বককে মৃদু পরিষ্কার করে, যেন ত্বক অতিরিক্ত শুকিয়ে না যায়।
এই পদ্ধতি রাতে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে উপযোগী, যখন ত্বকে সারাদিনের ময়লা এবং মেকআপ জমে থাকে।
এখন সময় এসেছে ফেসওয়াশের চেয়ে কিছুটা আলাদা ও কার্যকর পদ্ধতি অবলম্বন করার। ডবল ক্লিনজিং পদ্ধতি আপনার ত্বকের সমস্যা দূর করতে উত্তম পদ্ধতি। এটি ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে, ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ, অতিরিক্ত তেল, এবং মেকআপ পরিষ্কার করে সজীব ও মসৃণ ত্বক প্রদান করবে। নিয়মিত এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি সহজেই সুরক্ষিত ও সতেজ ত্বক পেতে পারেন।