শাকসবজি-ফল-মাছ রাসায়নিকমুক্ত করার উপায়
দিন দিন খাদ্য পণ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিকের মিশ্রণ বেড়েই চলছে। ফরমালিনসহ নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে শাকসবজি, ফল, মাছসহ অন্যান্য খাবারে। এইসব রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত খাদ্যগুলি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসব খাবারের বেশি খাওয়ার কারণে ঝুঁকিতে পড়ছে মানব স্বাস্থ্য। রাসায়নিক মিশ্রিত ফল, শাকসবজি ও মাছ খেয়ে অসুখ-বিসুখ বাড়ছে।
বাজারে ওঠা শাকসবজি-ফলগুলো টাটকা দেখালেও অনেক সময় ব্যবসায়ীরা এগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশান। খাবারগুলো সজীব ও টাটকা রাখতেই তারা এসব দ্রব্য ব্যবহার করে থাকেন। এসব ক্ষতিকর পদার্থ মানবদেহে প্রবেশ করলে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া যেমন-নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, গ্যাসট্রাইটিস হতে পারে। কখনও কখনও এসব রাসায়নিকের প্রতিক্রিয়ায় ক্যান্সারের ঝুঁকিও দেখা দেয়।
রাসায়নিকযুক্ত খাবার পরিহার করার জন্য কিছু বিষয়ে নজর রাখতে হয়। এসব খাবার কেনার সময় কিছু দিকে খেয়াল রাখলে এসব ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যযুক্ত খাবার পরিহার করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের চোখ দেখলেই বোঝা যায় এতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে কি না। তাদের ভাষায়, ঘোলাটে, অনুজ্জ্বল বা সজীবতার লক্ষণ না থাকলে বুঝতে হবে এতে ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো হয়েছে। মাছের মাথা, কানকো ও তেলে এর প্রকোপ বেশি থাকে। রাসায়নিকযুক্ত মাছের পেটের দিক বেশি নরম হয়। মাছ কেনার সময় হাতে নিয়ে দেখে বুঝে কেনা উচিত। রাসায়নিকযুক্ত মাছ সাধারণ মাছের তুলনায় খুব সহজে কাটা যায়। রক্তপাতও তেমন হয় না।
আবার সবক্ষেত্রে বাজারে রাসায়নিকযুক্ত খাবার দেখে বোঝা যায়না। তাই এইসব খাবার বাজার থেকে কেনার পর সেগুলোকে ঘরোয়া উপায়ে রাসায়নিকমুক্ত করতে হয়। ফলমূল ও শাকসবজি রাসায়নিকমুক্ত করার ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।
১. রান্নার আগে লবণ পানি দিয়ে মাছ ভিজিয়ে রাখুন। এতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের পরিমাণ ৯০ শতাংশ কমে যায়। এছাড়া, প্রথমে চাল ধোয়া পানি ও পরে সাধারণ পানি দিয়ে মাছ ধুলেও রাসায়নিকের পরিমাণ অনেকটাই কমে।
২. যে কোনও ফল বা সবজি খাওয়ার বা রান্না করার আগে ১০ মিনিট লবণ মেশানো হালকা গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। এতে ফল বা সবজি জীবাণুমুক্ত হবে।
৩. অনেকেই শুটকি মাছ খেতে ভালবাসেন। কিন্তু শুটকিতে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক মেশানো হয়। তাই রান্নার আগে প্রথমে গরম পানিতে ১ ঘণ্টা এবং তারপর স্বাভাবিক পানিতে আরও ১ ঘণ্টা শুটকি ভিজিয়ে রাখুন। এতে মাছটি রাসায়নিকমুক্ত হবে।
৪. মাছ রান্না করার আগে একটি পাতিলে বা গামলায় ৫ চামচ ভিনিগার মিশিয়ে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে মাছ পুরোপুরি রাসায়নিকমুক্ত হয়।
উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনি ঘরোয়া ভাবেই এই খাবারগুলো রাসায়নিকমুক্ত করতে পারবেন। বাজার থেকে এগুলো বাসায় এনে প্রথমেই রাসায়নিকমুক্ত করে নেয়া উচিত।