দেশে করোনার প্রথম ঢেউ এখনো শেষ হয়নি
দেশ করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের চূড়া বা ‘পিক’ গত আগস্টে পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত প্রথম ঢেউ শেষ হয়নি বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। তারা বলছেন, চূড়া পেরিয়ে গেলেও সংক্রমণ এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি বলে মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক পরামর্শক মুজাহেরুল হক। তিনি বলেন, দেশে প্রথম ঢেউ এখনো মিলিয়ে যায়নি। তবে নিয়ন্ত্রণে আনার দিকে যাচ্ছে।
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশ আয়োজিত ‘করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে গতকাল শনিবার জনস্বাস্থ্যবিদেরা এসব তথ্য জানান।
করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে প্রথম রোগী পাওয়া যায় ৮ মার্চ। এপ্রিলে সংক্রমণ হার ১২ শতাংশে উঠে। ৩১ মেতে সংক্রমণ হার ২০ শতাংশে ঠেকল। এরপর ২০ আগস্ট পর্যন্ত এই হার ২০-এর বেশি ছিল। ২১ আগস্ট সংক্রমণ হার কমে ১৮-এর ঘরে নামে।
নজরুল ইসলাম বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করে দেশে সংক্রমণের পিক বা চূড়া কবে হলো? ৩১ মে থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত চূড়া ছিল। সাধারণত সুচালো ও মালভূমি আকৃতি এই দু’ধরনের চূড়া দেখা যায়। আমাদের দেশে মালভূমির মতো চূড়া ছিল। তবে এখন প্রথম ঢেউ শেষ হয়নি। সংক্রমণ ১০ শতাংশের ঘরে আছে।
ওয়েবিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, করোনা সারা বিশ্বের কাছেই নতুন। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোও এটি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না, এমন না। কিন্তু সফলতা যে নেই, এটা বলা যাবে না। করোনার পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে তা মোকাবিলায় কাজ করছে সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, শীতকালে এমনিতেই ঠান্ডার সমস্যা থাকে। সেকেন্ড ওয়েভের তীব্রতা কমাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। করোনা শহর এলাকাতে তাণ্ডব বেশি চালাচ্ছে। শহর এলাকাতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। এই কাজে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য জেহাদুল করিম, সাবেক সচিব আবুল কালাম আজাদ, আবদুল লতিফ মণ্ডল প্রমুখ।