জাভান গন্ডার রক্ষার চেষ্টা
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে শিকারিরা জাভান গন্ডার হত্যা করছে, কারণ তাদের শিং চীনের কালোবাজারে অনেক দামে বিক্রি করা যায়৷
বিশ্বে একমাত্র জাভাতেই এই প্রজাতির গন্ডার পাওয়া যায়৷ তাই তাদের রক্ষায় ব্যবস্থা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ৷ ড্রোনেরও সহায়তা নেওয়া হচ্ছে৷
এছাড়া শিকারিদের ধরতে জাভা দ্বীপের উজুং কুলন জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা বসানো হয়েছে৷ রেঞ্জাররাও এখন সতর্ক অবস্থায় আছেন৷ শিকারিরা ইতিমধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জাভান গন্ডার হত্যা করেছে৷
উদ্যানের একজন রেঞ্জার দারিয়ান বলেন, ‘‘আমি খুব দুঃখ পেয়েছি৷ জাতীয় উদ্যানের কাছে বাস করা মানুষেরা তাদের নিজেদের স্বার্থে গন্ডারদের হত্যা করছে৷ আমরা এটা আশা করিনি৷ আগে যারা বনে অবৈধভাবে শিকার করতেন তারা এই পশুদের কিছু করতেন না৷’
রেঞ্জাররা গতবছর জানতে পারেন যে, উদ্যানের প্রত্যন্ত এলাকায় গন্ডার নিধন চলছে৷
এরপর পুলিশ শিকারিদের একটি দলকে আটকের পর রেঞ্জারেরা মৃত গন্ডারের অবশিষ্টাংশ খুঁজে পেয়েছিলেন৷ ২০১৯ সাল থেকে ২৬টি গন্ডার হত্যার খবর পাওয়া গেছে৷
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, ‘‘গন্ডার শিকারিদের দুটি গ্রুপ আছে৷ একটিকে আমরা ধরেছি৷ এরপর মূল হোতাকেও ধরা হয়েছে৷ এখন আমরা আরেক গ্রুপকে ধরার চেষ্টা করছি৷”
শিকারিদের কাছ থেকে ৩০ হাজার ইউরো দিয়ে গন্ডারের শিং কেনা এক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়েছে৷
শিকারিরা জানতেন ঠিক কোথায় গন্ডারদের পাওয়া যায়৷ সে কারণে কর্তৃপক্ষ এখন আরও বেশি সতর্ক৷
উজুং কুলন জাতীয় উদ্যানের প্রধান আরদি আর্দোনো বলেন, ‘‘আমরা আগের ভুল আর করতে চাই না৷ কতগুলো সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে তার সংখ্যা আমি বলবো না৷ কোথায় গন্ডারদের দেখা গেছে সেই তথ্যও দেব না৷ এমনকি উদ্যানের ছবি অস্পষ্ট করে দিতে আমি গুগল আর্থের সঙ্গে কথা বলার বিষয়েও ভাবছি৷”
উদ্যানে এখন কতগুলো গন্ডার আছে সেটি কেউ জানেন না৷ শিকারের তথ্য জানার আগেও বন্যপশুর সংখ্যা নিয়ে সরকারের দেওয়া তথ্য নিয়ে সন্দেহ ছিল৷
বেঁচে থাকা প্রায় ৫০টির মতো গন্ডারকে নিরাপদ এলাকায় নিয়ে তাদের মধ্যে মিলন ঘটানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷
রেঞ্জার দারিয়ান বলেন, ‘‘এখন যতগুলো গন্ডার আছে তাদের টিকিয়ে রাখাই যথেষ্ট নয়৷ কারণ, তাহলে ৫০ বছরের মধ্যে সব জাভান গন্ডার মরে যেতে পারে৷ এর কয়েকটি কারণ আছে৷ তারা একা থাকতে পছন্দ করে৷ আর একবার সন্তান জন্ম দেওয়ার পর আবারও সক্ষম হতে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে৷”
গন্ডারদের প্রজননে সহায়তা করা একটি দীর্ঘমেয়াদি ও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা৷ স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে উদ্যান কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং ড্রোন দিয়ে শিকারিদের খোঁজা শুরু করেছে৷
অনন্যা/এআই