নান্দনিক অন্দরসজ্জা
আপনার অন্দরকে আপনি কিভাবে সাজাবেন তা নির্ভর করবে সম্পূর্ণই আপনার রুচির উপর। তবে অন্দরসজ্জার সময় অবশ্যই যাতে অন্দর যথেষ্ট দৃষ্টি নন্দন ও নান্দনিক হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। রুচি যেমনই হোক না কেন অন্দর যদি নান্দনিক ভাবে সাজানো হয় তাহলে সেটা মনে ও চোখে দুইয়ের আরাম হয়। একটা বাড়ির পরিবেশ কেমন তা সাজানোর রুচি থেকেই বোঝা যায়। তাই অন্দরকে সজিব , সতেজ, শুভ্র ও দৃষ্টিনন্দন ও নান্দনিক উপায়ে সাজান যাতে করে সারাদিনের সকল ক্লান্তের অবসান ঘটে। এই অন্দরে প্রতিটা কর্নার যেন জীবন্ত ও প্রাণবন্ত হয় যাতে করে সারাদিনের ক্লান্তির অবসান ঘটে। মনটাও ফুরফুরে থাকে।
স্বস্তির জায়গা করে তুলুন
ইট পাথরের যান্ত্রিক শহরে গাছপালা বৃক্ষরোপণ বিলাসিতার একটি অংশ। চারিদিকে যেখানে শুধু বড় বড় দালান ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না সেখানে গাছের নিচে বসে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। যা করা যায় তা হলো ইনডোর প্লান্ট ও ঘরের বারান্দাগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। চাইলে ছাদ বাগানো করা যায়। তবে যেহেতু ঘরে স্বস্তি দরকার হচ্ছে সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই সবুজের ছোঁয়া থাকা আবশ্যক। বারান্দায় কিংবা ঘরের খোলামেলা জায়গায় কিছু গাছ লাগানো যায়। এই গাছগুলো থেকে মনে শান্তি লাগবে। ঘরের মধ্যে ভালো থাকে এমন কিছু গাছ এখন সহজে কিনতে পাওয়া যায় এবং সেগুলো খুব সহজেই ঘরের মধ্যেই যত্নে রাখা যায়।
অন্দর সজ্জায় মাটির জিনিস
মাটির জিনিসপত্র আমাদের দেশীয় শিল্পের একটি বড় চিহ্ন বলা যেতে পারে। মাটির জিনিসপত্র দিয়ে ঘর সাজালে ঘরে দেশীয় শৈল্পিকতা ফুটে উঠবে। মাটির জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে আয়না লাগানো যেতে পারে। এছাড়াও মাটির অনেক ঝুলন্ত শোপিস লাগানো যেতে পারে চাইলে মাটির কোন মূর্তিও ঘরে লাগাতে পারেন।
দেশীয় দেওয়াল
ঘরের দেওয়ালের কর্ণার যেন দেশীয় সংস্কৃতির কথা বলবে এমন ভাবেই তৈরি হোক ঘরের দেয়ালগুলো। তথাকথিত ক্যানভাস অবশ্যই লাগাবেন তবে সে ক্যানভাস যেন কোন একটা নির্দিষ্ট গল্প বলে এরূপ চিন্তা করে লাগাতে পারে যেমন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধর কিছু সুন্দর চিত্র লাগানো যেতে পারে। বাংলাদেশের পতাকা, রিকশাচিত্র, মডার্ন আর্ট, বোহো আর্ট ও সিনেমার পোস্টার এগুলো আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির ইঙ্গিত দেয়। এই ধরনের জিনিসগুলো দেয়ালে লাগানো যেতে পারে। এছাড়া রোপ দিয়ে তৈরি করা আয়না লাগাতে পারেন।
বসার ঘর
আড্ডায় মজায় আনন্দে আত্মীয় থেকে পরিবার বন্ধু বান্ধব প্রিয়জন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানোর যে জায়গাটা সেটা হল বাসার বসার ঘর। তাই বাসার বসা বসার ঘর যত মনোরম এবং সুসজ্জিত ও রঙিন হবে ততই বেশি সুন্দর লাগবে। বাসার বসার ঘর আপনার রুচির পরিচয় দেয়। আপনি কতটা আভিজাত্যময়, সুন্দর রুচির মানুষ তা প্রকাশিত হয় বসার ঘরে চিত্র দেখার মাধ্যমেই। তাই বসার ঘরে তাজা ফুল রাখুন। সোফার কভারগুলোর রঙিন রাখুন এবং বিপরীত কোন রঙের কুশন ব্যবহার করুন। এছাড়াও একটু পাতলা পর্দা বসন্তের জন্য উপযোগী। আকাশে এখন মিষ্টি রোদ ও রঙিন মেঘের খেলা চলে। তাই এমন পর্দা লাগান যাতে পর্দার ভেতর থেকেও দেখা যায়। পর্দার রং গুলো যাতে একটু উজ্জ্বল এবং হালকা রঙের হয়। সোফার কুশন ও পর্দার একটা মনোক্রমিক কনট্রাস্ট যেন বসার ঘরে ফুটে ওঠে।
গৃহে দেশীয় আসবাব
গৃহে দেশীয় আসবাব বলতে বেত বা বাঁশের কোন ফার্নিচার রাখতে পারেন। বারান্দায় কিংবা লিভিং রুমে একটি বেতের দোলনা রাখা যেতে পারে। এছাড়াও কিছু বেতের চেয়ারে রঙিন কুশন রাখতে পারেন। বেতের বা বাঁশের বুক সেলফ রাখতে পারেন। এছাড়া কোন একটি ঘর সম্পূর্ণ বেত বা বাঁশের ফার্নিচার দিয়ে সাজাতে পারেন। দেশীয় আসবাবের ক্ষেত্রে মোড়া বিষয়টা একদমই বাদ দেওয়া যাবে না।
দোলনা রাখার স্থান
বর্তমানে অন্দরসজ্জায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ও চলমান বস্তু হচ্ছে দোলনা। দোলনা একটা শখের জিনিস। ছোট থেকে বড় সবাই দোলনা দেখে আকর্ষিত হয়। দোলনা যেমন মনে আনন্দ দেয়, তেমনি ঘরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। আপনি যেখানে চান দোলনা রাখতে পারেন! তবে ব্যাপারটা অতটা আকর্ষণীয় হবে না। দোলনা রাখার সবচেয়ে ভালো জায়গা বারান্দা, লিভিং রুম, ওপেন স্পেস অথবা ঘরের কোনো খালি কর্ণার। দোলনা দেখতে যাতে রঙিন হয়, সেই বিষয় মাথায় রাখতে হবে। রঙ্গিন দোলনা ঘরকে আরো সুসজ্জিত ও আকর্ষণীয়। কাঠের দোলনা, বাঁশ বা বেতের দোলনা, লোহার দোলনা, দড়ির দোলনা । ঘরের চাহিদা বুঝে আপনি আপনার পছন্দমত দোলনা দিয়ে ঘর সাজাতে পারেন।
অন্দর সজ্জার একটি অন্যতম বিষয় হচ্ছে যতটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি রাখতে হবে। অন্দরে চোখে শান্তি দেয়, এভাবেই পুরো অন্দরকে সাজাতে হবে।