সুইডেনের মিষ্টি রুটির সম্মানে বিশেষ দিবস
সুইডেনের মানুষ মিষ্টি খেতে ভালোবাসেন। তাদের এক বান রুটির সম্মানে বিশেষ দিবসও পালিত হয়। চিরায়ত পদ্ধতিতে বেকিংয়ের পাশাপাশি সেই রুটির মধ্যে কিছু আধুনিক ছোঁয়াও লেগেছে।
সুইডেনের মানুষের প্রিয় বান রুটি কানেলবুলে দারুচিনির রোল হিসেবেও পরিচিত।স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অন্যান্য দেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সেটি জনপ্রিয়৷ সুইডেনে বিরতির সময়ে সেই বানের বিশেষ কদর রয়েছে।
সেই রুটি খেতে মচমচে, রসালো ও মিষ্টি৷ দারুচিনির স্বাদ তো আছেই। ময়দা, চিনি, লবণ, পানি, ইস্ট, ডিমের কুসুম ও মাখন দিয়ে কাজ শুরু হয়৷ উপকরণগুলি খুবই সাধারণ। ময়দার তাল ইলাস্টিক হওয়া পর্যন্ত হাতে করে অথবা মিক্সারে ভালো করে মাখতে হয়।
পেস্ট্রি শেফ হিসেবে লিনেয়া আন্দ্রেয়া বলেন, ‘‘আমি শীতল তরল ব্যবহার করি, কারণ মাখার সময়ে ঘর্ষণে উত্তাপও সৃষ্টি হয়৷ আমি মাত্রাতিরিক্ত উত্তাপের কারণে ইস্টের সম্প্রসারণে বাধা দিতে চাই না।”
ময়দা মাখা হলে লিনেয়া কয়েক ঘণ্টার জন্য সেই তাল ফ্রিজে রাখেন। এবার পুর তৈরি করার পালা। তিনি বলেন, ‘‘পুরের মধ্যে শুধু মাখন, চিনি ও দারুচিনি থাকে৷ একটু রদবদল করে আমন্ড বাদামের গুঁড়া, বীজ বা বাদামও যোগ করা যায়৷ ব্রাউন সুগারও ব্যবহার করা যায়৷ তবে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো, মাখন দিতে হবে। মার্জারিন চলবে না।”
মাখনই অনন্য স্বাদ যোগ করে। পুরের জন্য সেটা নরম হতে হবে। এরপর লিনেয়া ঠাণ্ডা করা ময়দার তাল ময়দা ছড়ানো জায়গার ওপর বেলে নেন৷ তিনি বলেন, ‘‘তারপর আমি প্রস্তুত করা পুর নিয়ে উদার হাতে একটা স্তর সৃষ্টি করি৷ কিপটামি করলে চলবে না। কারণ পুরই সঠিক স্বাদ আনে।”
এবার তিনি বেলে চ্যাপটা করা ও পুর ভরা ময়দার তাল সযত্নে ভাঁজ করেন। লিনেয়ার মতে, ‘‘সাধারণ ছুরি বা পিৎসা কাটার দিয়ে সেই লেচি ভাগ করা যায়৷ আমি দ্রুততার খাতিরে সাধারণত এমন এক যন্ত্র ব্যবহার করি৷ তারপর শুধু একটু টানতে হয়।”
এবার লিনেয়া কাটা লেচি পাকিয়ে চিরায়ত রোল সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, ‘‘দারুচিনির রোল তৈরির নানা উপায় রয়েছে৷ চিরায়ত আকারের পাশাপাশি এমনভাবেও করা যায়৷ এখানে একটা গিঁট দিয়ে তারপর আরেকটি গিঁট দেওয়া যায়৷ এখানে একটা গিঁট রয়েছে।”
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লিনেয়া আন্দ্রেয়া বলেন, ‘‘প্রথমবার বাবার সঙ্গে দারুচিনির রোল বেক করার কথা আমার মনে আছে।সেখান থেকেই সম্ভবত বেকিং সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল৷ আমার মনে আছে, তখন আমার বয়স দুইয়ের কাছাকাছি। সে সময়ে খুব মজা লেগেছিল। সৃজনশীল হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম৷ আমার খুব ভালো লেগেছিল।”
আকার দেওয়ার পর সেই রোল মোটামুটি আধ ঘণ্টার মতো হালকা গরম তাপমাত্রায় রাখতে হয়৷ বেকিং-এর আগে ব্রাশ দিয়ে তার ওপর ডিমের কুসুমের প্রলেপ লাগানো হয়।তার ওপর চিনির গুঁড়াও ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷ সেটাই সুইডিশ দারুচিনির রোলের বৈশিষ্ট্য।
সুইডেনের মানুষ তাদের কানেলবুলার এতটাই ভালোবাসেন, যে তার জন্য ৪ঠা অক্টোবর বিশেষ দিবসও পালন করা হয়৷ তবে প্রতিদিনই কফি ব্রেকের সময় সেই বান রুটি খাওয়া হয়। সুইডেনে দিনে কয়েক বার এমন বিরতির চল রয়েছে।
অনন্যা/এআই