শীতের শীতলতায় শাল
শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে বলে। ভোরে কিংবা রাতে শীতের উষ্ণতা অনুভব করা যায়। হিম হিম শীতের বাতাস বইছে চারিদিকে।
শাল একটি আভিজাত্যময় পোশাক। যুগ যুগ ধরে শাল পড়ার রীতি রয়েছে। সে সময় রাজা-মহারাজা ও অনেক অভিজাত শ্রেণির লোক থেকে শুরু করে নিম্ন শ্রেণির সবাই শালের উষ্ণতায় শীত থেকে রেহাই পেতো। সেই সময় থেকে মানুষ কাঁধে ঝুলিয়ে নিতেন বাহারি কারুকাজ করা নানান রকমের শাল।
হিম হিম শীত থেকে শুরু করে তীব্র কনকনে শীত সে যাই হোক না কেন শীত থেকে রেহাই পেতে ভারি বা পাতলা নানা রকমের শাল শরীরে জড়িয়ে নেওয়া যেতেই পারে। শাল কোন নারী পুরুষ ভিত্তিক পোশাক নয়। এটা যে কেউই পড়তে পারে। শাল যুগ যুগ ধরে শীতবস্ত্র হিসেবে পরিচিত হলেও নতুন প্রজন্মের কাছে এটি ফ্যাশন অনষঙ্গও বটে।
শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, জিন্স, কুর্তি, ফতুয়া, স্কার্ট, গাউনএবং পাঞ্জাবিসহ সবকিছুর সঙ্গে মানাসই শাল। ওয়েস্টার্ন থেকে ট্রেডিশনাল সব পোশাকে শাল যেন এক মানানসই শীতবস্ত্র। এছাড়াও শীতের সোয়েটার, ব্লেজার, কোর্ট, জ্যাকেট নানান ধরনের শীতকালীন পোশাক থাকলেও শরীরে শাল জড়িয়ে চলাফেরা করার যে আরাম তা অন্য কোন বছরে নেই।
বর্তমান সময়ে সালে রয়েছে নানান ধরনের বৈচিত্র্যতা। এক একটা পোশাকের সাথে একেক ধরনের শাল পড়তেই মানুষ বেশি পছন্দ করছে। এছাড়াও হরেক রকম কাপড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে শাল। ডিজাইনের তো কোন জুড়ি নেই বললেই চলে। বর্তমান সময়ে যে ডিজাইনগুলোর শালে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে-
- তার মধ্যে কাশ্মীরি শাল যেখানে সম্পূর্ণ শালটিতে সুতা দিয়ে কাজ করা থাকে। কাশ্মীরি শালের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পশমিনা শাল । পশমিনা সংগ্রহ করেন কেউ কেউ নেপাল থেকে।
- শালের উপর ডিজিটাল প্রিন্ট করা। সেখানে নানা রকমের ডিজিটাল প্রিন্ট রয়েছে। সেই প্রিন্টগুলোতে একেক সময় একেকটা ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়। যেমন- গ্রাম বাংলা, যামিনী রায়, দ্যা স্ট্যারি নাইট, রিকশা চিত্র, বিখ্যাত সিনেমা, পুতুল নাচ ও নানা ধরনের আরো অনেক ডিজাইন।
- ব্লকের শাল গুলো মূলত একটু পাতলা ধরনের হয়ে থাকে। হিম হিম শীতে পড়ার জন্য একদম উপযুক্ত। বিস্কোস কাপড়ের উপর নানা ধরনের রং ব্যবহার করে সেই শালগুলোতে ব্লক করা হয়ে থাকে।
- এসবের বাইরেও বিদেশি শাল লুধিয়ানা, জয়পুরি, চায়নিজ, থাইল্যান্ড,বার্মিজ ও ইরানি শালও হতে পারে শীত বস্ত্র হিসেবে পছন্দ অনেকের। বিদেশি শালগুলোতে বিভিন্ন বড় বড় ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার করে সেই শালগুলোর নকশা করা হয়। যেকোন ওয়েস্টার্ন পোশাকের সাথে সেই শালগুলো মানানসই।
শালের রঙের ক্ষেত্রে একটু সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত। খুব হালকা রঙের শাল ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ শীতকালীন কোন বস্ত্র সহজে বা প্রতিদিন ধোয়া একটু কঠিন। তাই একটু গাঢ় রংয়ের শাল শীতকালীন বস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। যেমন- লাল, নীল, বাদামী, খয়েরীসবুজ, কালো, বেগুনি এই ধরনের রং গুলো শীতের শালের জন্য একদম উপযোগী।
এ ধরনের শাল গুলো বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ, নিউমার্কেট ও বিভিন্ন অনলাইন শপ সহ অনেক জায়গায় পেতে পারেন। সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত শাল পাওয়া যায়।