Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহ্য ভেঙে রানি হওয়া এক নারীর গল্প!

স্পেনের রানি লেতিসিয়া অরতিজ রোকাসোলানো। রানি হওয়ার পর অভিনন্দনের বন্যা যেমন বয়ে গেছে, তেমনি তিনি আলোচনায়ও এসেছেন স্পেনের রাজপরিবারের ঐতিহ্য ভাঙার কারণে। স্পেনের রাজপরিবারের ঐতিহ্য ভেঙে রানি হয়েছেন লেতিসিয়া অরতিজ রোকাসোলানো। কারণ, ১৮৭৮ সালের পর তিনিই প্রথম সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া স্প্যানিশ রানি। চলুন জানা যাক কিভাবে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ মেয়ে থেকে হয়ে উঠছেন স্পেনের রানি।

১৯৭২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর স্পেনের উত্তরাঞ্চলে সাংবাদিক পরিবারে জন্ম লেতিসিয়ার। তাঁরা বাবা হোসে অরতিজ আলভারেজ পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। মা মারিয়া দে লা পালোমা রোকাসোলানো রদ্রিগেজ ছিলেন রেজিস্টার্ড নার্স ও হাসপাতাল ইউনিয়নের প্রতিনিধি। আর লেতিসিয়ার দাদি ৪০ বছর রেডিও ব্রডকাস্টার ছিলেন। মাদ্রিদের কমপ্লুটেন্স ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রি করেন লেতিসিয়া। এরপর তিনি ইনস্টিটিউট ফর স্টাডিজ ইন অজিওভিজ্যুয়াল থেকে অডিওভিজ্যুয়াল সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই তিনি একাধিক গণমাধ্যমে কাজ শুরু করেন। ‘লা নুয়েভা এস্পানা’ পত্রিকা দিয়ে তাঁর সাংবাদিকতার শুরু। শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ইএফইতে কাজ করার আগপর্যন্ত তিনি স্প্যানিশ সংবাদপত্র এবিসিতে সাংবাদিকতা করেছেন।

লেতিসিয়া মেক্সিকোতে অল্প কিছুদিন সাংবাদিকতা করেছেন। এরপর তিনি স্পেনে ফিরে এসে ব্লুমবার্গ ও সিএনএনের স্প্যানিশ সংস্করণে কাজ করা শুরু করেন। ২০০৩ সালে তিনি স্পেনের সবচেয়ে বেশি দেখা দৈনিক সান্ধ্য সংবাদ অনুষ্ঠান টেলিডিয়ারিও ২-এর টিভি উপস্থাপকের সম্মাননা পান। সাংবাদিকতাজীবনে লেতিসিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খবর, নাইন–ইলেভেন হামলার পর নিউইয়র্ক থেকে খবর সরাসরি সম্প্রচার ও ইরাক যুদ্ধের বিষয়ে নানা প্রতিবেদন করেছেন।

২০০২ সালে সহকর্মী বন্ধু সাংবাদিক পেড্রো এরকুইসিয়ার আমন্ত্রণে নৈশভোজে যোগ দেন লেতিসিয়া। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্পেনের প্রিন্স ফিলিপও। সেখানেই তাঁদের প্রথম দেখা ও পরিচয়। এই পরিচয় ধীরে ধীরে পরিণয়ে রূপ নেয়। শুরু হয় প্রিন্স ও সাংবাদিক লেতিসিয়ার প্রেমকাহিনি। এরপর ২০০৩ সালের ১ নভেম্বর তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের কথা ঘোষণা করেন।

২০০৪ সালের ২২ মে মাদ্রিদের ক্যাথেড্রাল দে সান্তা মারিয়া লা রিয়াল দে লা আলমুদেনায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিন্স ফিলিপ ও লেতিসিয়ার বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে একজন সাধারণ সাংবাদিক থেকে লেতিসিয়া হয়ে যান প্রিন্সেস অব অস্ট্রিয়াস। এরপর থেকে লেতিসিয়ার জীবন বদলে যেতে শুরু করে। সাংবাদিকতা ছেড়ে রাজপরিবারের কাজে মন দেন তিনি। প্রায় চার দশক ধরে স্পেনের রাজা থাকা হুয়ান কার্লোস ২০১৪ সালে সিংহাসন ত্যাগ করে ছেলে ফিলিপের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এরপর ফিলিপ রাজা ও লেতিসিয়া রানির আসনে বসেন। রানির আসনে বসে ইতিহাস সৃষ্টি করেন লেতিসিয়া।

ফিলিপ ও লেতিসিয়ার দুই সন্তান রয়েছে। ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর প্রিন্স ফিলিপ ও প্রিন্সেস অব অস্ট্রিয়াস লেতিসিয়ার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। এই কন্যাসন্তানের নাম রাখা হয় লিওনর। এরপর ২০০৭ সালের ২৯ এপ্রিল ইনফান্তা সোফিয়া নামে তাদের দ্বিতীয় কন্যার জন্ম হয়।

অনন্যা/জেএজে

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ