Skip to content

৫ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর তিন প্রস্তাব

লিঙ্গ সমতা বলতে কোনও ছেলে হোক বা মেয়ে কিংবা সাবালক পুরুষ বা নারী নির্বিশেষে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্পদ, সুযোগ ও সুরক্ষা লাভ করা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ব্যাপারে সমান অধিকারকে বোঝায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কেবল নারী হওয়ার কারণে কোনো ব্যক্তি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। লিঙ্গ সমতা এর বিপরীতে কাজ করে। লিঙ্গ সমতা একটি সমাজে নারীদের এগিয়ে যেতে উৎসাহ প্রদান করে। ফলে সমাজ উন্নতির মুখ দেখে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা লিঙ্গ সমতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি বৈঠক বসে মঙ্গলবার। সেখানে সভাপতির আহ্বানে নারী নেতাদের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে নারী নেতৃবৃন্দের একটি নেটওয়ার্ক গঠনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। 

 

বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘এটি নারী ক্ষমতায়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি যে, আমরা নারী নেতাদের একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারি, যা আমাদের শুধু একক বৈঠকের জন্য একত্রিত করবে না, বরং লিঙ্গ সমতা অর্জনে বাস্তব পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে একটি শক্তি হিসেবে কাজ করবে। 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে যেগুলো সঠিকভাবে সমাধান করা প্রয়োজন সে বিষয়ে বিশ্বনেতাদের সামনে তিনটি প্রস্তাব রাখেন। 

 

প্রথম প্রস্তাবে বলেন, ‘আমি লিঙ্গ সমতার বিষয়ে উপদেষ্টা বোর্ড প্রতিষ্ঠার জন্য আপনাদের প্রশংসা করি। এখন এটিকে স্থানীয়করণ করা দরকার। আমাদের প্রত্যেক পর্যায়ে, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে লিঙ্গ চ্যাম্পিয়ন প্রয়োজন এবং আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দিতে পারি।

 

দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, নারী নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোকে পর্যাপ্ত রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা প্রয়োজন। এ ধরনের প্রচেষ্টায় সহায়তার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

তৃতীয় ও শেষ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি লিঙ্গ সমতার জন্য আমাদের সাধারণ কর্মসূচিকে জোরদার করতে নেতৃবৃন্দের একটি সম্মেলন ডাকার করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। শুধু আমরা নয়, সব নেতার এতে যোগদান করা উচিত এবং লিঙ্গ সমতার অগ্রগতির জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি উপস্থাপন করা উচিত।

 

তনিক যত্ন নেওয়ার কাজ বেড়েছে, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বেড়েছে। ইউনিসেফ এ দশকের শেষের আগে আরও ১০ মিলিয়ন বাল্যবিবাহের আশঙ্কা করছে।

 

বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ৭ম অবস্থানে আছে। বর্ধিত-সংখ্যক নারী কর্মীবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা-কর্মীদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী এবং তারা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে রয়েছে। তৈরি পোশাককর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশি নারী। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাদের অনেকে চাকরি ও আয় হারিয়েছে। নারীসহ ২০ লাখ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছে।  

 

এর আগে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অগ্রগতির জন্য 'মুকুট মণি' উপাধি পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউটের গ্লোবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্র্যাকটিস ও ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক তাঁকে এ উপাধি দেয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ