Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাবিদের দ্বারা পরিচালিত সেই বিখ্যাত হোটেল

দিনাজপুর শহর থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে ভারত সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে চলেছে টাঙ্গন নদ। নদের ওপরে নির্মিত হয়েছে সেতুসহ রাবার ড্যাম। দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার এই জায়গার নাম রানীর ঘাট মোড়। তবে এখন পরিচিতি ‘ভাবির মোড়’। একজন নারীকে সম্বোধনের নামে মোড়! ব্যাপারটা অদ্ভুত না!

এখানে রাস্তার দুই পাশে দুটি করে চারটি খাবারের হোটেল। এই হোটেলগুলোতে থাকে হাঁসের মাংস সহ অন্যান্য খাবার। এরই পাশে লেখা, ‘ভাবির হোটেল–১’। এভাবে একে একে মোট চারটি হোটেল। এই চারটি হোটেলের মালিকই চার নারী, যাদের ভাবি হিসেবে সম্বোধন করা হয়। এই থেকেই তাদের হোটেলের নাম হয় ভাবির হোটেল। এই হোটেলগুলোয় খাবার পরিবেশন থেকে বিল নেওয়া—সব কাজই করছেন ‘ভাবি’। এই হোটেলের নাম থেকেই মোড়ের নামও হয়ে উঠেছে ভাবির মোড়। 

মোড়ের চারটি হোটেল পরিচালনা করছেন মাসতারা বেগম (৪৫) যিনি এলাকার জামালউদ্দিনের স্ত্রী, তাসলিমা আক্তার (৪০) এলাকার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী, মেরিনা পারভীন (৩৭) নাজমুল হকের স্ত্রী এবং বেলী আক্তার (৪০) হুসেন আলীর স্ত্রী। খাবার হোটেলগুলো পরিচালনা করেন এলাকার চারজনের স্ত্রী। তাঁদের ভাবি বলে ডাকেন সবাই। তাই হোটেলের নামও হয়েছে ভাবির হোটেল। দিনে দিনে তাঁদের হোটেলে হাঁসের মাংসের রান্নার স্বাদ মুখে মুখে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এখন রানীর ঘাট পরমেশ্বরপুর নাম বদলে ‘ভাবির মোড়’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

 

ভাবিদের দ্বারা পরিচালিত সেই বিখ্যাত হোটেল

হোটেলের শুরু

১৯৯০ সালের কথা। শুষ্ক মৌসুমে টাঙ্গন নদ থেকে ট্রাকে করে বালু উত্তোলন করা হয়। ট্রাকে বালু ভরতেন শ্রমিকেরা। তাদের দরকার পড়ল কাজের ফাঁকে একটু চা-নাশতার। তখন মোড়ে প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে চা-বিস্কুট বিক্রি শুরু করেন সবজি বিক্রেতা জামালউদ্দিনের স্ত্রী মাসতারা বেগম। একদিন শ্রমিকদের অনুরোধেই সেখানে ডাল-ভাত-ডিম বিক্রি শুরু করেন। দুই বছর হল বালুর ঘাট বন্ধ। থেকে গেছে ভাবির হোটেল। এভাবে ধীরে ধীরে রানীর ঘাট নাম বদলে হয়েছে ভাবির মোড়। এই মোড়ে প্রথম হোটেল চালু করেন মাসতারা বেগম। তাঁর ব্যবসার উন্নতি দেখে একে একে পরবর্তী সময়ে আরও তিনজন এখানে হাঁসের মাংস ও ভাত বিক্রি শুরু করেন। 

 

প্রতিদিন প্রত্যেকে ১৫ থেকে ২০টি হাঁস রান্না করেন। থাকে অন্য পদও। প্রতিজন ৫০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে খাওয়া শেষ করতে পারেন। ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয় হাঁসের মাংস। একদিকে মুখরোচক খাবার, অন্যদিকে টাঙ্গন নদের ওপরে রাবার ড্যামের সৌন্দর্য। দুটি কারণেই সাত কি আট বছর ধরে এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ